বেসরকারি স্কুল-কলেজের এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোর কয়েকটি ধারা ও উপধারা সংশোধনী চূড়ান্তকরণের সভা সোমবার (১৩ জুলাই) ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়েছে। যদিও এমপিও নীতিমালার সংশোধনীর কোনও কিছুই চূড়ান্ত হয়নি আজকের সভায়। আগামীকাল মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) নীতিমালা ও জনবল কাঠামো চূড়ান্তকরণে ফের অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
সোমবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যায় সভায় উপস্থিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোমিনুর রশিদ আমিন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিকেলে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নীতিমালার বেশ কিছু দিক নিয়ে আমরা কাজ করছি। সময় স্বল্পতার কারণে যেগুলো সব আজকের সভায় উপস্থাপন করা সম্ভব হয়নি। তাই, আগামীকাল আমরা আবারও বসবো।
এদিকে নীতিমালার কোন কোন দিকে সংশোধন আসছে এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এই কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, নীতিমালা সংশোধন কমিটির সভায় যে সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে সেগুলোই সভায় উপস্থাপন করছি।
মাধ্যমিক স্কুলের শাখা খোলা ও নিয়োগ, নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পিওন পদে নিয়োগ কোন অর্থ বছরে শুরু হবে ইত্যাদি বিষয় আলোচনা হয়েছে। এমপিওর তিনটি নীতিমালা নিয়ে কথা হয়েছে।
নীতিমালা কোন কোন দিক থেকে পরিবর্তন হবে সে বিষয়ে এখনই স্পষ্ট কিছু বলা যাচ্ছে না। আমরা সুপারিশগুলো উপস্থাপন করছি। মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ স্থানীয়রা এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন।
আগামীকালের সভায় নীতিমালার সংশোধনী চূড়ান্ত করে ফেলা হবে কি না তা জানতে চাইলে অতিরিক্ত সচিব মোমিনুর রশিদ আমিন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমরা অনেকগুলো বিষয় সংশোধনের জন্য কাজ করছি সব কয়টি সুপারিশ যদি উপস্থাপন করে সিদ্ধান্ত নিয়ে আসতে পারি তাহলে বিধিমালা চূড়ান্ত করে ফেলা হবে। তবে এ মুহূর্তে সুনির্দিষ্টভাবে কিছুই বলা যাচ্ছে না যে, আগামীকালের সভায় সংশোধনীর সবগুলো দিক নিয়ে আমরা আলোচনা করতে পারব কি না।
এদিকে সভায় উপস্থিত অপর একটি সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, সভায় নিম্ন মাধ্যমিক এবং মাধ্যমিক স্কুলের কম্পিউটার ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের এমপিও নীতিমালায় এ পদটি সৃষ্ট। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ মে জারি করা নবসৃষ্ট পদে আদেশে বলা হয়েছিল ২০২০-২১ অর্থবছরে এ পদে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হবে। ইতোমধ্যে নির্ধারিত অর্থবছর শুরু হয়ে গেছে। এ বিষয়টি নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। তবে সুস্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত এখনো পর্যন্ত হয়নি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর সুনির্দিষ্ট আদেশ জারি করবে।
গত বছরের শেষ দিকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মধ্য থেকে দাবি বিদ্যমান নীতিমালা ও জনবল কাঠামো সংশোধনের উদ্যোগ নেয় সরকার। এ লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করে। কমিটি গত জুন মাসে নীতিমালা সংশোধনের সুপারিশ প্রতিবেদন তৈরি করে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির কাছে জমা দেয়। গত ১৪ জুন এ নিয়ে দৈনিক শিক্ষায় প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। প্রতিবেদন দেখে কমিটির সদস্য নন-এমপিও শিক্ষক গোলাম মাহামুদুন্নবী ডলার নিজ ফেসবুকে লেখেন তিনি কিছুই জানেন না। তিনি আরও দাবি করেন কমিটির প্রতিবেদনের জন্য তার কাছ থেকে সই নেয়া হয়নি। তাহলে কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয় কীভাবে?
গত ১২ নভেম্বর বেসরকারি স্কুল ও কলেজের এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো সংশোধনে ১০ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের বেসরকারি মাধ্যমিক শাখার অতিরিক্ত সচিব মোমিনুর রশিদকে কমিটির আহ্বায়ক করা হয়। কমিটিতে নন-এমপিও শিক্ষক নেতারাও সদস্য হিসেবে ছিলেন। তবে, প্রথম দিনে তারা কিছু লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন। তাদের পক্ষ থেকে ওটাই প্রথম ও শেষ ভূমিকা। এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় সংস্কারের সুপারিশ করতে বলা হয়েছিল এ কমিটিকে। এরপর এ লক্ষ্যে পাঁচটি সভা করে কমিটি।
গত ১১ মার্চ এমপিও নীতিমালা কমিটির পঞ্চম সভা, ৭ জানুয়ারি চতুর্থ সভা, ২২ ডিসেম্বর তৃতীয় সভা, ১২ ডিসেম্বর দ্বিতীয় সভা এবং ৪ ডিসেম্বর এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো সংশোধনে গঠিত কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাগুলোর আলোচনা নিয়েই এমপিও নীতিমালা সংশোধনের লিখিত সুপারিশ তৈরি করা হয়েছে বলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।