এমপিওভুক্তি ঘোষণায় মূল সংকট অর্থ

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

২০১০ খ্রিষ্টাব্দে সরকার এক হাজার ৬২৪টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করে। প্রায় একই সময় এমপিও পায়নি কিন্তু এমপিও পাওয়ার যোগ্য এমন পাঁচ হাজার ২৪০টি স্কুল চিহ্নিত করে। এসব স্কুলে শিক্ষক ৭৫ হাজার। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণে এগুলো এমপিওভুক্ত করা যায়নি। রোববার (২৪ মার্চ) দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন নিজামুল হক।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের পর আর কোনো প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়নি। প্রায় আট বছর পর ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসে নতুন করে এমপিওভুক্তির উদ্যোগ নেয়া হয়। এমপিওভুক্তি সংক্রান্ত দুটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটিও গঠন করা হয়। এই উদ্যোগ নেয়ার প্রায় আট মাস পেরিয়ে গেছে। কিন্তু এখনও এমপিওভুক্তির ঘোষণা না আসায় শিক্ষকরা আন্দোলনে নেমেছেন।

তবে এমপিওভুক্তি না পাওয়ার ক্ষেত্রে অর্থ সংকটই অন্যতম কারণ এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, সরকার পর্যায়ক্রমে যোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকেই এমপিওভুক্তি করবে। এ ব্যাপারে আগামী বাজেটের আগেই ঘোষণা আসতে পারে।

 

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সম্প্রতি বলেছেন, অনলাইনে প্রায় সাড়ে নয় হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রায় দুই হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন শর্ত পূরণ করায় তাদের বিবেচনা করা হয়েছে। দ্রুতই ওই দুই হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে ধাপে ধাপে এমপিওভুক্ত করা হবে। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে থেকে অর্থপ্রাপ্তি সাপেক্ষে আশা করছি খুব দ্রুতই এমপিওভুক্ত করতে পারব।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির অপেক্ষায় সেগুলো যাচাই-বাছাই করে আগামী তিন অর্থবছরে ধাপে ধাপে এমপিওভুক্তি করা হবে। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসাইন বলেন, এমপিওভুক্তিতে বিলম্ব হচ্ছে না। সরকারের একটি প্রক্রিয়া আছে। সে অনুযায়ী যথাসময়ে এমপিওভুক্ত হবে। অর্থ সংকটের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকার অর্থ যোগান দেবে।

তথ্য অনুযায়ী, গত বছর জুনে কমিটি গঠনের পর প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে আবেদন চাওয়া হয়। অনলাইনে এমপিওভুক্তির জন্য নিম্ন-মাধ্যমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, মাদরাসা, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নয় হাজার ৪৯৮টি আবেদন পড়ে। শর্ত নির্ধারণ করে দিয়ে সফটওয়্যারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যোগ্য তালিকা করা হয়। এ তালিকায় প্রায় দুই হাজার প্রতিষ্ঠান আছে।

বর্তমানে এমপিও সংক্রান্ত ব্যয় বরাদ্দ বছরে ১৪ হাজার ১৮২ কোটি টাকা। সাড়ে নয় হাজার প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে, সেগুলোকে এমপিও দিলে বছরে অন্তত আরও তিন হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) এক হিসাব মতে, প্রতিটি ডিগ্রি কলেজ এমপিওভুক্ত করতে বছরে প্রয়োজন ৬৯ লাখ ৪৪ হাজার ৬৫০ টাকা; উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে ৬৮ লাখ ৯৪ হাজার টাকা, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৩৩ লাখ ৮০ হাজার, আর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। অতীতে প্রায় প্রতিটি বাজেটে এমপিওর ঘোষণা থাকলেও কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি।

এমপিওভুক্তির দাবিতে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের পর শিক্ষকরা অন্তত ২০ বার আন্দোলন করেছেন। অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন। আশ্বাসও পেয়েছেন। কিন্তু আশ্বাস বাস্তবায়ন না হওয়ায় গত বুধবার থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। এই সময় অনেক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। আন্দোলরত শিক্ষকরা এখন প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত্ চাইছেন। ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার বলেন, আশ্বাসে আর ভরসা পাই না। প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চাই।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.00301194190979