ননএমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। আজ তৃতীয় দিনের মতো শুক্রবারও (২২ মার্চ) প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় অবস্থান নেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। শিক্ষক নেতারা জানান, তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ না করে যাবেন না। আজ জুমার দিন তারা রাস্তায়ই নামাজ আদায় করেন।
এদিকে, আন্দোলনকারী একজন শিক্ষক আজ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার নাম শৈলেন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বরগুনার তালতলী উপজেলার এতিম মঞ্জিল মহিলা দাখিল মাদরাসার শিক্ষক। তাকে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের সিসিইউতে রাখা হয়েছে।
ননএমপিও শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ বিনয় ভূষণ রায় দৈনিক শিক্ষাকে শুক্রবার সকালে বলেন, এমপিওভুক্তির দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ আমরা চাই। আগে আমাদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের যদি বাড়ি ফিরে যেতে বলেন, সে নির্দেশও আমরা মানব। তবে আমাদের বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রী আমাদের খালি হাতে ফেরাবেন না।
গতকাল (২১ মার্চ) পুলিশের প্রবল আপত্তির মুখে রাতেও কদম ফোয়ারার সামনের রাস্তার ওপর অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ননএমপিও শিক্ষকরা। এর আগে, সকালে পুলিশের বাধায় কদম ফোয়ারার সামনে থেমে যায় এমপিওর দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্দেশে শিক্ষকদের পদযাত্রা। বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করলে পুলিশ বাধা দেয়। বাধা পেয়ে রাস্তার ওপর অবস্থান নেন হাজার হাজার শিক্ষক। শিক্ষকদের আশা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করতে পারলেই তাদের দাবি আদায় হবে।
রাতেও শিক্ষকরা এমপিও চাই, দিতে হবে, এমপিও ছাড়া বাড়ি ফিরে যাব না স্লোগান দিয়েছেন। পুলিশ মাইক কেড়ে নিলেও হ্যান্ড মাইকে চলেছে স্লোগান।
গত বুধবার থেকে এমপিওর দাবিতে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা। ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার বলেন, নন-এমপিও শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করার জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে আবেদন করে আসছি। প্রধানমন্ত্রী এর আগে আমাদের আশ্বস্ত করেন। এরপরও দেড় বছর অতিক্রম হয়েছে। উচ্চমহলে বিভিন্ন সময় আমরা যোগাযোগ করেছি। কিন্তু তাদের একই কথা, আমাদের কিছু করার নেই। তাই আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের লক্ষ্যে এক মাস আগে এই পদযাত্রা কর্মসূচি দেই, যেটি বুধবার হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের কারণে পুলিশ কর্মকর্তাদের অনুরোধে বুধবার আমরা সেটি স্থগিত করে বৃহস্পতিবার দেই। কিন্তু পুলিশ আমাদের এখানে (কদমফুল ফোয়ারা মোড়) আটকে দেয়। আমরা শিক্ষক, সহিংস কিছু করব না। তাই আমাদের যেখানে আটকে দেওয়া হয়েছে, সেখানেই বসে পড়েছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাস্তায় অবস্থান করব।
শাহবাগ থানার পেট্রোল (টহল) ইন্সপেক্টর আবুল বাশার সাংবাদিকদের জানান, মিছিল করে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা, এটা কোনো অবস্থাতেই সম্ভব না। তাই আমরা এখানে বাধা দিয়েছি।