চাকরি জীবনে পদোন্নতি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কর্মস্পৃহা, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা মূল্যায়নে পদোন্নতি ব্যবস্থার গুরুত্ব অপরিসীম। অনুপাত প্রথার কারণে কলেজ, মাদরাসা, কারিগরির সকল প্রভাষক পদোন্নতি পাচ্ছে না।
প্রভাষকদের পদোন্নতির বিষয়ে সারাজীবন মাত্র একটি প্রমোশনের কথা থাকলেও সেই পদোন্নতির স্বপ্ন এই ‘অনুপাত প্রথা’ সবকিছু মাটি করে দেয়। একটু চিন্তা করলে বুঝতে পারবেন, শুধু শিক্ষকতা পেশা নয়; যে কোনো পেশার মানুষ চাকরি জীবনে যদি একটি পদবি নিয়ে অবসর নিতে হয় তাহলে সেই মানুষটির কাজের গতি মন্থর হওয়াটা স্বাভাবিক।
অনুপাত প্রথা (৫:২) এর কারণে একই স্কেলে, একই দিনে, একই যোগ্যতায় নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে ৮ বছর পর কেউ বেতন পাবেন ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা, আর কেউ ১০ বছর পর পাবেন ২৩ হাজার টাকা। একজনের ৮ বছর পর বেতন বৃদ্ধি পাবে ১৩ হাজার ৫০০ টাকা, অন্যজন একদিন পরে জন্মগ্রহণ করার কারণে ১০ বছর পর বেতন বৃদ্ধি পাবে মাত্র এক হাজার টাকা!!
অনুপাত প্রথা যে বিবেকহীন প্রথা, এটা বুঝতে বেশি জ্ঞানী হওয়ার দরকার নেই। তাই উন্নত জাতি গঠন করতে হলে, জাতিকে উন্নত শিক্ষা দিতে হলে, উচ্চশিক্ষাকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে প্রভাষকদের গতিশীল করার কোনো বিকল্প নেই। প্রভাষকদের গতিশীল করতে তাদের প্রমোশন দেয়াটা খুবই জরুরি।
আগামীকাল ৯ জুলাই এমপিও নীতিমালা সংশোধনী চূড়ান্তকরণের প্রাক্কালে শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী ও শিক্ষাসচিবসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে দেশের কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরির হাজার হাজার প্রভাষকদের পক্ষে আমি চারটি দাবি পেশ করছি।
১. অনুপাত প্রথা বাতিল করে একটি নির্দিষ্ট সময় পর সকল প্রভাষককে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দিতে হবে। সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদ সৃষ্টি করতে হবে।
২. প্রভাষকদের ১০ বছর পূর্তিতে ৭ম গ্রেড প্রদান করতে হবে।
৩. অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রভাষকদের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদে আবেদনের সুযোগ দিতে হবে।
৪. সর্বোপরি মুজিববর্ষকে স্মরণীয় করে রাখতে চলতি বছরেই শিক্ষাব্যাবস্থা জাতীয়করণের ঘোষণা চাই।
লেখক : মো. মনিরুল ইসলাম, আরবি প্রভাষক, হোমনা, কুমিল্লা।
[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন।]