এমবিবিএস ভর্তি সম্পন্ন ২১ আসন শূন্য রেখেই!

নিজস্ব প্রতিবেদক |

সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতায় দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে ২১টি আসন শূন্য রেখেই এমবিবিএস ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রতি বছরই গড়ে ৮ থেকে ১০ আসন এভাবে শূন্য থাকে। এতে মেধাবী শিক্ষার্থীরা সরকারি মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, অপেক্ষমাণ তালিকায় শিক্ষার্থী থাকলেও বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে আসন শূন্য রেখে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে আসন শূন্য রয়েছে ২১টি। অপেক্ষমাণ তালিকায় রয়েছেন ২৪ শিক্ষার্থী।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারি মেডিকেল কলেজে শিক্ষাগ্রহণের স্বপ্ন দেশের সব মেধাবী শিক্ষার্থীর থাকে। সামান্য নম্বরের কারণে অনেক সময় পিছিয়ে যায়। তাই আসন শূন্য থাকা সাপেক্ষে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে মেধাবীদের ভর্তি করা হোক। কারণ ২১টি সিট ফাঁকা থাকা মানে ২১ জন ভবিষ্যৎ চিকৎসক হারাতে হবে জাতিকে।

এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, সরকারি মেডিকেল কলেজে আসন শূন্য থাকা কোনোভাবেই কাম্য নয়। যারা প্রথমে ভর্তির সুযোগ পায় এবং যারা অপেক্ষমাণ থাকে তারা সবাই মেধাবী। খুবই সামান্য ব্যবধানে তারা পিছিয়ে পড়ে। তাই যদি একটি আসনও ফাঁকা থাকে তাহলে অবশ্যই অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে মেধাক্রম অনুসারে তাদের সুযোগ দেয়া উচিত।

অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, দেশের সরকারি ৩৬ মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য ৪ হাজার ৬৮ জনকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করা হয়। গত ১১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বর ও এসএসসি/সমমান, এইচএসসি/সমমান পরীক্ষার প্রাপ্ত জিপিএ মিলে অর্জিত স্কোরের ভিত্তিতে (মেধা ও পছন্দ) তাদের নির্বাচিত করা হয়। 

১৫ অক্টোবর মেডিকেল ভর্তির ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ৪ হাজার ৬৮টি আসনের মধ্যে সাধারণ আসন ৩ হাজার ৯৬৬, মুক্তিযোদ্ধাদের ছেলে-মেয়ে এবং নাতি-নাতনির জন্য ৮২ এবং পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর জন্য ২০টি আসন সংরক্ষিত রাখা হয়। একই সঙ্গে মেধাভিত্তিক ৫০০ জনকে অপেক্ষমাণ তালিকায় রাখা হয়। আসন শূন্য হলে মেধা ও পছন্দ অনুযায়ী তারা ভর্তির সুযোগ পাবেন।

অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে প্রথম মাইগ্রেশনে ২৭০ জন শিক্ষার্থীকে ডাকা হয়। প্রথম মাইগ্রেশন থেকে ভর্তি শেষে দ্বিতীয় মাইগ্রেশনে ১৫৬ শিক্ষার্থীকে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ডাকা হয়। আর সর্বশেষ তৃতীয় মাইগ্রেশনে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ৬৯ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে ৬৯ জনকেই ডাকা হয়। আর এতে ভর্তি শেষে আসন ফাঁকা থাকে ২১টি।

অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, কর্মকর্তারা বিচক্ষণ হলে অপেক্ষমাণ তালিকায় রাখা ৫০০ জনের মধ্যে থাকা বাকি ২৪ জনকেও ডাকা হতো। তাহলে তৃতীয় মাইগ্রেশন শেষে ২১টি আসন ফাঁকা থাকত না। পাশাপাশি ২১ জন মেধাবী শিক্ষার্থী সরকারি মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেত।

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. একেএম আহসান হাবীব বলেন, বিষয়টি আসলে আগে থেকে বিবেচনা করা উচিত ছিল। নীতিমালা অনুযায়ী তৃতীয় মাইগ্রেশনের পরে আর নতুন করে শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ নেই। প্রতি বছরই এভাবে কিছু আসন ফাঁকা থাকে। ভবিষ্যতে এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অধিদফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে তিনবার কেবল মাইগ্রেশনের মাধ্যমে অন্য মেডিকেল কলেজে বদলি করা হবে। এরপর আর ভর্তি করার সুযোগ নেই। তবে নীতিমালা পরিবর্তন করে চাইলে বাকি ২১ আসনে মেধাবী শিক্ষার্থীদের সুযোগ দেয়া সম্ভব।

এ প্রসঙ্গে অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেন বলেন, ‘আমরা বিষয়টি বিবেচনা করছি। সম্ভব হলে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে’।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028331279754639