সিলেটে ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তবে পুলিশ আসামিদের খুঁজে না পেলেও ফেসবুকে সরব রয়েছেন আসামিরা। শনিবার সকালেও ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিতে দেখা গেছে এই মামলার দুই আসামিকে। স্ট্যাটাসে তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন।
গণধর্ষণের মামলার ৫ নম্বর আসামী রবিউল ইসলাম শনিবার সকাল ১১ টার দিকে ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘সম্মানিত সচেতন নাগরিকবৃন্দ, আমি রবিউল হাসান। আমি এম সি কলেজের একজন শিক্ষার্থী। আপনারা অনেকেই চিনেন, আমি কেমন মানুষ তা হয়তো অনেকেই জানেন। গতকাল এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের সাথে, কে বা কারা আমাকে জড়িয়ে অনেক অনলাইন নিউজ করিয়েছেন, আমি এম সি কলেজ ছাত্র, কিন্তু হোস্টেলে কখনোই ছিলাম না, আমি বাসায় থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। আপনাদের সকলের কাছে অনুরোধ করছি, আমি এই নির্মম গণধর্ষণের সাথে জড়িত নই, আমাদের পরিবার আছে। যদি আমি এই জঘন্যকাজের সাথে জড়িত থাকি তাহলে প্রকাশ্যে আমাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। আমি কোনোভাবেই এই কাজের সাথে জড়িত নই। সবার কাছে বিনীত অনুরোধ করছি সত্য না যেনে আমাকে এবং আমার প্রাণের সংগঠন ছাত্রলীগের নামে কোনো অপপ্রচার করবেন না। ছাত্রাবাসে গণধর্ষণকারী সকল নরপশুদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
মালার ৬ নম্বর আসামি মাহফুজুর রহমান মাসুম ফেসবুকে লিখেছেন, ‘এরকম জঘন্য কাজের সাথে আমি জড়িত না। যদি জড়িত প্রমাণ পান প্রকাশ্যে আমাকে মেরে ফেলবেন। একমাত্র আল্লাহর উপর বিশ্বাস আছে। আল্লাহ আমাকে নির্দোষ প্রমাণ করবেন। তবে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার আগে আমাকে সুইসাইডের দিকে নিয়ে যাওয়া আপনাদের বিচার আল্লাহ করবেন।’
তবে শনিবার সন্ধ্যার দিকে সব আসামির ফেসবুক আইডি বন্ধ পাওয়া গেছে। শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাইয়ুম চৌধুরী জানান, আমরা আসামিদের গ্রেফতারে সবধরনের চেষ্টা করছি। বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চলছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার সন্ধ্যায় নববিবাহিতা স্ত্রীকে নিয়ে গাড়িতে করে এমসি কলেজে বেড়াতে গিয়েছিলেন দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার এক বাসিন্দা। সেখানে যাওয়ার পর অভিযুক্তরা তাদের জোর করে কলেজ ছাত্রাবাসে নিয়ে আসে। এ সময় স্বামীকে আটকে স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। খবর পেয়ে শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে শাহপরাণ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার করে। ধর্ষণের শিকার নারীকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। মারধরের শিকার স্বামীও চিকিৎসা নিয়েছেন।