নওগাঁর ধামুরহাটের লক্ষণপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। টাকার বিনিময়ে অযোগ্য প্রার্থীকে নিয়োগের চেষ্টার অভিযোগে এলাকাবাসীর তোপের মুখে নিয়োগ বোর্ড বন্ধ করতে বাধ্য হন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। এ নিয়োগ বন্ধের দাবিতে মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) সকাল থেকে অভিভাবক ও এলাকাবাসী বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। এসময় টাকার বিনিময়ে কাউকে প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ না দেয়ার দাবিও জানান তারা।
কয়েকজন অভিভাবক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বেরীতলা একাডেমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক জিন্নাতুন নেসাকে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এখানে প্রকৃত প্রার্থীদের নিয়োগে অংশ নিতে দেয়া হচ্ছে না।
নিয়োগপ্রার্থী মো. তোফাজ্জল হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্রসহ আবেদন করেছিলাম। আমাকে পরীক্ষার প্রবেশপত্র দেয়া হয়নি। কেন প্রবেশপত্র দেয়া হয়নি জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ জানায়, সহকারী প্রধান শিক্ষকের এমপিও কপি না দেয়ায় আবেদনটি বাতিল করা হয়েছে। অথচ প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ আমাকে সেটা জানাননি।
অপর একজন নিয়োগ প্রার্থী মো. মজনুর ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমাকেও পরীক্ষার প্রবেশ পত্র দেওয়া হয়নি। কেন দেয়া হয়নি তা আমি জানিনা।
বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য মো. মাসুদ করিম সরদার ও মো. মোতালেব হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ টাকার বিনিময়ে এ নিয়োগ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যখন এই নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেন, তখনও অনিয়ম করেছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুল ও সভাপতি। অনিয়মের বিষয়ে তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও বলেন গত ৩ জুন পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ার পর ৫ জুন সন্ধ্যায় আমাদের কাছে ফোন করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, গত ৩ তারিখে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ হয়েছে তাই রেজুলেশনে আগামীকাল স্বাক্ষর করে দিয়েন। এ জন্য আমরা মহামান্য কোর্টে মামলা করেছি।
এবিষয়ে প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ নূরুল ইসলামের দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সবকিছু ম্যানুয়াল মতই হচ্ছে। এ ব্যাপারে আপনাকে চিন্তা করতে হবে না।
অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মো. আমিনুর হক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে আমরা নজিপুরে বসে রেজুলেশন করেছি। টাকার বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারটি তিনি অস্বীকার করেন। পরবর্তীতে একাধিকবার তার মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি আর রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার মো. মোবারুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দুটি মামলা চলমান থাকার কারণে ডিজির প্রতিনিধির জন্য ডিজি মহোদয় বরাবর আবেদন করেন প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। সেই আবেদনের ভিত্তিতে ডিজির আইন শাখা হতে নিয়োগের অনুমোদন আসলে আমি ডিজির প্রতিনিধি দেই। এরপর যদি নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ কোন অনিয়ম করে তাহলে তার দায়ভার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের ওপর বর্তাবে।