গণিতের পরীক্ষায় সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর জব্দ করায় বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হুমকিতে পাঁচ দিন অবরুদ্ধ হয়ে আছেন একজন শিক্ষক। পটুয়াখালীর বাউফল আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নজরুল ইসলাম টিপু সামাজিক ও পারিবারিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারছেন না। এমনকি ঘর থেকে বের হতে পারছেন না তিনি। বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে হুমকির কথা জানান এ শিক্ষক।
নজরুল ইসলাম টিপু জানান, এসএসসির গণিত বিষয়ের পরীক্ষায় পৌর সদরের বাউফল আদর্শ বালিকা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভেন্যুতে ক্যালকুলেটর জটিলতায় ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয় পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে। দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটের মৌখিক নির্দেশে পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রের ১ নং কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন কালে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে সায়েন্টেফিক ক্যালকুলেটর নিয়ে গেলেও পুনরায় ১০ মিনিটের মধ্যে ফেরত দেয়া হয় তা। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পরীক্ষা শেষে কয়েক পরীক্ষার্থী ও অভিভাবক ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেয় তাকে।
তিনি বলেন, ‘প্রশ্নপত্র কঠিন হওয়ায় পরীক্ষার্থীদের গণিত পরীক্ষা ভাল হয়নি। এতে ক্যালকুলেটর নেয়ার অজুহাত তুলে উদ্দ্যেশ্যমূলকভাবে সোহরাব হোসেন নামে এক অভিভাবক লাঞ্ছিত করে আমাকে। এরপর থেকে আমি নিরাপত্তাহীনতায় আছি। পাঁচ দিন পর্যন্ত ঘরে অবস্থান করে অতিকষ্টে দিনযাপন করছি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসা. জাহানারা বেগম এ ব্যাপারে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন বলেও তিনি জানান।
এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীদের অভিভাবক মফিজ জানান, গত ৯ ফেব্রুয়ারি গণিতের পরীক্ষার দিন হল থেকে বের হলে সোহরাব হোসেন নামে এক অভিভাবকের নেতৃত্বে কতিপয় পরীক্ষার্থীরা কক্ষ পরিদর্শক নজরুল ইসলামকে লাঞ্ছিত করে ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। পরে বিদ্যালয়ের দরজায় লাথি মারে এবং ইটপাটকেল ছুড়ে বিদ্যালয়ের দরজা-জানালার কাচ ভাংচুর করে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিজুস চন্দ্র দে বলেন, ‘ক্যালকুলেটর ব্যবহার নিয়ে পরীক্ষার্থী ও কর্তৃপক্ষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। তাৎক্ষনিক তা সমাধানও করা হয়েছে। কক্ষ পরিদর্শক ওই শিক্ষকের কোন দোষ এতে প্রতীয়মান হয়নি। তাকে কেউ প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে থাকলে তিনি আইনের আশ্রয় নিতে পারেন। সে সুযোগ তার এখনও আছে।’
উল্লেখ্য, গত শনিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) গণিত বিষয়ের পরীক্ষায় নৈব্যক্তিক শেষে সৃজনশীল পরীক্ষা শুরুর মুহুর্তে হলে নিয়ে আসা কয়েক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে পরিদর্শক নজরুল ইসলাম সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর নিয়ে গেলে পরীক্ষা শেষে খাতা নিয়ে অফিস কক্ষে যাওয়ার সময় ওই শিক্ষক ও দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে শারীরিক লাঞ্ছিত করা হয় নজরুল ইসলামকে।