এসএসসির ফলে অসন্তুষ্ট ২ লাখ ২১ হাজার পরীক্ষার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক |

ফলাফলে অসন্তুষ্ট দুই লাখ ২১ হাজারের বেশি এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থী তাদের খাতা পুনর্নিরীক্ষার আবেদন করেছে। আটটি সাধারণ, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ডের শিক্ষার্থীরা এ আবেদন করেছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ আবেদন পড়েছে গণিত ও ইংরেজিতে। 

গত ৬ মে প্রকাশিত এসএসসি ও সমমানের ফল চ্যালেঞ্জ করার শীর্ষে বরাবর মতো এবারও ঢাকা বোর্ড। আর বিষয়ভিত্তিক আবেদনের শীর্ষে গণিত ও ইংরেজি। এ দুটি বিষয়ে বেশি ফেল করায় এবার পাসের হার বিগত বছরের তুলনায় দুই দশমিক ৫৮ শতাংশ কমেছে। 

বিধান অনুযায়ী পুনর্নিরীক্ষণে সাধারণত চারটি বিষয় দেখা হয়। এগুলো হলো, উত্তরপত্রে সব প্রশ্নের সঠিকভাবে নম্বর দেওয়া হয়েছে কি-না, প্রাপ্ত নম্বর গণনা ঠিক হয়েছে কি-না, প্রাপ্ত নম্বর ওএমআর শিটে উঠানো হয়েছে কি-না এবং প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী ওএমআর শিটে বৃত্ত ভরাট সঠিকভাবে করা হয়েছে কি-না। এসব বিষয় পরীক্ষা করেই পুনর্নিরীক্ষার ফল দেওয়া হয়।

ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট প্রকৌশলী মনজুরুল কবীর দৈনিকশিক্ষাকে বলেন,  ঢাকা বোর্ডে ৬৩ হাজার ৪০০ পরীক্ষার্থী এক লাখ ৪১ হাজার বিষয়ে ফল চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করেছে। এ বোর্ডের আবেদনে শীর্ষে গণিত ও ইংরেজি। রাজশাহী বোর্ডে ২১ হাজার ১৭৬ শিক্ষার্থী ৪০ হাজার ৯৬৮টি বিষয়ে আবেদন করেছে। এর মধ্যে গণিতে সাত হাজার ২৬২ জন, ইংরেজি প্রথম পত্রে তিন হাজার ২৪১ ও দ্বিতীয় পত্রে দুই হাজার ৮৬৪ জন। দিনাজপুর বোর্ডে ১৭ হাজার ৮০৮ শিক্ষার্থী ৩৪ হাজার ৮৫৩টি বিষয়ে আবেদন করেছে। এ বোর্ডেও আবেদনের শীর্ষে গণিত। এ বিষয়ে আবেদনের সংখ্যা ছয় হাজার ২০৬টি। ইংরেজি প্রথম পত্রে তিন হাজার ১৯৫ ও দ্বিতীয় পত্রে দুই হাজার ৯০৪ জন আবেদন করেছে। কুমিল্লা বোর্ডে ১৬ হাজার ৮৩৭ পরীক্ষার্থী ৩৬ হাজার ৭৮৪টি বিষয়ে আবেদন করেছে। এর মধ্যে গণিতে চার হাজার ৯১১ জন, ইংরেজি প্রথম পত্রে চার হাজার ৫৫২ জন ও দ্বিতীয় পত্রে তিন হাজার সাতজন। বরিশাল বোর্ডে ১৬ হাজার ৬৭৩ শিক্ষার্থী ২২ হাজার ১৫২ বিষয়ে আবেদন করেছে। এর মধ্যে গণিতে চার হাজার ৯১১ জন, ইংরেজি প্রথম পত্রে চার হাজার ৫৫২ ও দ্বিতীয় পত্রে তিন হাজার সাতজন।

চট্টগ্রাম বোর্ডে ২৩ হাজার ৩৮০ জন ৫৩ হাজার ৫৩০টি বিষয়ে আবেদন করেছে। এ বোর্ডে গণিতে সাত হাজার ৫৫ জন, ইংরেজি প্রথম পত্রে পাঁচ হাজার ৭৮২ ও দ্বিতীয় পত্রে তিন হাজার ৬৫৪ জন আবেদন করেছে। 

সিলেট বোর্ডে ১০ হাজার ৬৭৮ শিক্ষার্থী ২০ হাজার ৪৫৭টি আবেদন করেছে। এর মধ্যে গণিতে পাঁচ হাজার ৯৫ জন, ইংরেজিতে তিন হাজার ৫০৩ জন আবেদন করেছে। যশোর বোর্ডে মোট আবেদন করেছে ৩৮ হাজার ৫৩ জন। এর মধ্যে গণিতে পাঁচ হাজার ৫৭৯, ইংরেজি প্রথম পত্রে চার হাজার দু'জন ও দ্বিতীয় পত্রে তিন হাজার ৬৮০। মাদ্রাসা বোর্ডে মোট আবেদন ৩৫ হাজার ৮৮৯টি পত্রের মধ্যে আবেদনকারী ২১ হাজার ৭৫৬ জন। এ বোর্ডে গণিতে আবেদন ১১ হাজার ৭৯৩ এবং ইংরেজিতে এক হাজার ৮৪৭। গত বছর ফলাফল চ্যালেঞ্জ করে দুই লাখ ৬৬ হাজার ৩৪০ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছিল। কারিগরি বোর্ডের মোট আবেদনকারী সংখ্যা ১৩ হাজার ৬৪৪। তারা মোট ২৪ হাজার বেশি পত্রের জন্য আবেদন করছেন। 

তিনি বলেন, এবার গণিত ও ইংরেজিতে পাসের হার কমায় এ দুই বিষয়ে আবেদনকারী সংখ্যা বেড়েছে। একই সঙ্গে অনেক শিক্ষার্থীর ১ বা ২ নম্বরের জন্য পরবর্তী গ্রেড পায়নি, তারাও প্রচুর আবেদন করেছে। এসব কারণে এবার আবেদনের সংখ্যা বেড়েছে। তবে এটা উদ্বেগের কিছু না। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা সচেতন হয়েছে। এটা ভালো দিক। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শাহেদা ইসলাম বলেন, পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রত্যাশা তারা আরও ভালো ফল করতেন। এ চিন্তা-ভাবনা থেকেই তারা আবেদন করেন। 

গত ৬ মে প্রকাশিত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। গত নয় বছরের মধ্যে এবার সবচেয়ে কম পাস করেছে। এবার ১০টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০ লাখ ২৬ হাজার ৫৭৪ জন অংশগ্রহণ করে পাস করেছে ১৫ লাখ ৭৬ হাজার ১০৪ জন। পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৭। জিপিএ ৫ পেয়েছে এক লাখ ১০ হাজার ৬২৯ জন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য - dainik shiksha হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক - dainik shiksha সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার - dainik shiksha রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.016539096832275