১০ মাস আগে সমাপ্ত সেকায়েপ প্রকল্পের অধীনে নিয়োগ পাওয়া পাঁচ হাজার অতিরিক্ত শ্রেণি শিক্ষকদের (এসিটি) চাকরি স্থায়ী করার উদ্যোগ নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। কতিপয় সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, প্রচলিত পদ্ধতিতে এমপিওভুক্ত করা যাবে না। তবে, এসব শিক্ষকের জন্য নতুন কোনও পদ বের করে স্থায়ী করার উদ্যোগ নেয়া সঠিক হবে। কারণ, তারা অনেক মেধাবী এবং ইতোমধ্যে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। আর তাদের বেশিরভাগেরই চাকরির বয়স চলে গেছে। রোববার (২৮ অক্টোবর) সচিবালয়ে কতিপয় সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।
শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, সাধারণত প্রকল্পে নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়ম হচ্ছে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলে বিদায় করে দেওয়া হয়। কিন্তু আমরা তা করব না। তাদের(অতিরিক্ত শ্রেণি শিক্ষক) স্থায়ী করার ব্যবস্থা নেব।
জানা যায়, সেকায়েপ প্রকল্পের মেয়াদ শেষে এসিটিদের এমপিওভুক্ত করা হবে তা এসিটি ম্যানুয়ালের ৩৬ নং ধারা অনুযায়ী ও বিশ্ব ব্যাংকের প্রোগ্রাম প্ল্যান ২৬ পৃষ্ঠায় সরকারি বিশেষ আদেশের মাধ্যমে নতুন প্রকল্পে স্থানান্তরের কথা স্পষ্ট উল্লেখ ছিল। সেকায়েপ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক স্বাক্ষরিত একটি চিঠির মাধ্যমে ও সেকায়েপ এর সাবেক প্রকল্প পরিচালক ড. মো: মাহমুদ-উল হক প্রকল্পভুক্ত এসিটি শিক্ষকদের পরবর্তী সমন্বিত প্রকল্পতে রাখার জন্য মন্ত্রনালয়ে সুপারিশ করেন। শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে সরকারি আদেশ না আসা পর্যন্ত পাঠদান চালিয়ে যাওয়ার মৌখিক পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি । কিন্তু গত ১০ মাসেও সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ফলে এসব শিক্ষক বেতন না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণা্লয় ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাকে বলেছেন, সেকায়েপ প্রকল্পের বিএনপিপন্থী প্রকল্প পরিচালক সেকায়েক শিক্ষকদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে শ্রেণিকক্ষে রেখেছেন। প্রচলিত পদ্ধতিতে তাদেরকে এমপিওভুক্ত করার সুযোগ না থাকলেও মাঠ পর্যায় থেকে এসিটিদের এমপিওভুক্ত করার লক্ষ্যে তথ্য সংগ্রহ করার আদেশ দেয়ায় এসিটি শিক্ষকরা আশ্বান্বিত হয়েছিলেন। তারা পরে বুঝতে পেয়েছেন প্রকল্পের দলিলে উল্লেখ থাকলেই এমপিওভুক্ত হওয়া যায় না।
মাধ্যমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নত করতে বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে বাস্তবায়িত সেকায়েপ প্রকল্পের অধীনে দুর্গম ৬৪টি উপজেলার দুই হাজার ১০০টি স্কুলে গণিত, ইংরেজি ও বিজ্ঞান বিষয়ে ছয় হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ‘সেকায়েপ’ প্রকল্পে এসিটি কম্পোনেন্টটি যুক্ত হয়, যা শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন, ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় ফিরিয়ে আনা, পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের সামনে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে অভিভাবকদের সমন্বয় সভা, অতিরিক্ত ক্লাসের মাধ্যমে কোচিং বাণিজ্য, বাল্য বিবাহ ও শিশু নির্যাতন বন্ধসহ নানা ধরণের ইতিবাচক কার্যক্রম সফলতার সাথে সম্পন্ন করতে এডিশনাল ক্লাসরুম টিচার (এসিটি) প্রচেষ্টা যথেষ্ট ভূমিকা পালন করছে।