এসিটিদের অনশন অব্যাহত, অসুস্থ ২৬ শিক্ষক

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বিলুপ্ত সেকায়েপ প্রকল্পের  শিক্ষকদের সকাল সন্ধ্যার অনশন কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।  চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) তারা ১০ম দিনের মতো কর্মসূচি পালন করছেন। অনশনে এ পর্যন্ত ২৬ এসিটি শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ অতিরিক্ত শ্রেণি শিক্ষক (এসিটি) অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকরা। এরপর দুইদিন প্রতীকী অনশন শেষে গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে তারা সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে আসছেন। 

বাংলাদেশ এসিটি অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাদাকুল মুঈদ দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, আমাদের দাবি অত্যন্ত ন্যায্য ও যৌক্তিক। এরই মধ্যে ২৬ জন শিক্ষক অনশনের কারণে অসুস্থ হয়ে গেছেন, অনেককেই হাসপাতালে পাঠাতে হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো সদুত্তর বা আশ্বাস পাওয়া যায়নি। বর্তমান পরিস্থিতিতে এসিটিরা তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। 

অসুস্থ শিক্ষকরা হলেন, ফরিদুপরের কাজী নাসরিন, টাঙ্গাইলের নাসরিন আক্তার, শেরপুরের ফারহানা ববি, গোপালগঞ্জের রুবিয়া খানম, ময়মনসিংহের তোফায়েল তুহিন, সিরাজগঞ্জের রমজান আলী, নোয়াখালীর ইসমাইল হোসেন, গোপালগঞ্জের রইজউদ্দিন ও সেলিনা, সাতক্ষীরার খালেদা আক্তার, পটুয়াখালীর পিংকি খাতুন,ঠাকুরগাঁওয়ের হালিমা, ফরিদপুরের সুবোল বিশ্বাস, চাপাইনবাবগঞ্জর ইউসুফ ও সোহেল,লক্ষ্মীপুরের শিহাব উদ্দিন, ভোলার অবিরাম,নওগাঁর মিজান,বগুড়ার জিন্নাহ,কুষ্টিয়ার মাসুম বিল্লাহ চাঁদপুরের শরীফুল এবং কুড়িগ্রামের আতাউর।

আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষকরা জানান, দারিদ্রপীড়িত ও দুর্গম এলাকায় মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার মানোন্নয়ন, শিক্ষার্থী ঝরে পড়া কমাতে ২০১৫ খিস্ট্রাব্দে ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে প্রজেক্টের আওতায় নিয়োগ দেওয়া হয় ৫ হাজার ২০০ শিক্ষক। প্রকল্প শেষে এসিটিদের এমপিও সিস্টেমে অন্তর্ভুক্তিসহ যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রকল্পটি শেষ হওয়ার পর তাদের স্থায়ীকরণের আর কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। তাই তারা নিরুপায় হয়ে আন্দোলনে নেমেছেন।

চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে গত বছর কয়েকদফা মানববন্ধন করেছেন শিক্ষকরা। প্রথমে তারা এমপিওভুক্তির দাবি জানিয়ে আসছিলেন। পরে ওই দাবি থেকে সরে এসেছেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা এবং শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখার কয়েকজন কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাকে বলেছেন, এসিটিদের মধ্যে যারা যোগ্য তারা অন্যত্র চাকরি নিয়ে চলে গেছেন।

এমপিও  জনবল কাঠামো নীতিমালা অনুযায়ী তাদের নিয়োগ না হওয়ায় এমপিওভুক্ত করা সম্ভব নয়। তবু প্রকল্পের কতিপয় কর্মকর্তার কথিত আশ্বাস অনুযায়ী মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার গুনগত মানোন্নয়নে নতুন  প্রকল্প এসইডিপিতে সেকায়েপের বিভিন্ন কম্পোনেন্টের (পাঠাভ্যাস ও উপবৃত্তি) কার্যক্রম চালু হলেও এসিটিদের চাকরি স্থায়ী করার কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এতে চরমভাবে হতাশ হয়ে পড়েছেন  এ শিক্ষকরা।

মঙ্গলবার অনশন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন  এসিটি এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি রাফিউল ইসলাম রাফি, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাদাতুল মুঈদ, আতিকুর রহমান, মহিউদ্দিন মাহি, মোস্তাক আহমেদ শামীম, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি আরফান উল্লাহ, খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধি মো. মারুফ ও মুখপাত্র সুলতানুল মুসলেমিন অনিক প্রমুখ।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য - dainik shiksha হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক - dainik shiksha সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার - dainik shiksha রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0053679943084717