পরোয়ানাভুক্ত আসামি ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন আত্মগোপনে থাকায় তাকে গ্রেফতার করতে দেরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। শনিবার (১৫ জুন) দুপুরে জাতীয় জাদুঘরে একটি চিত্রকর্ম অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ওসি মোয়াজ্জেমকে গ্রেফতারে পুলিশের কোনো গাফিলতি আছে কিনা- সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, না, এখানে পুলিশের কোনো গাফিলতি নেই। তিনি আত্মগোপনে থাকায় গ্রেফতারে বিলম্ব হচ্ছে। তবে যে কোনো সময় তিনি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হতে পারেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ওসি মোয়াজ্জেম দেশেই আছে। তার পালানোর সুযোগ নেই। সীমান্ত সিলগালা করা হয়েছে, বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনগুলোতেও রেড অ্যালার্ট দেওয়া আছে। এ ছাড়া সারাদেশের সব থানায় মোয়াজ্জেমের ছবি পাঠানো হয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মালিবাগ ও গুলিস্তানে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনার তদন্ত আমরা গুছিয়ে এনেছি, শিগগিরই এ ব্যাপারে সবাইকে জানানো হবে।
গত বুধবার ফেনীর সোনাগাজী থেকে ঢাকায় আসা পুলিশের একটি দল ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেফতার করতে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে। যদিও এখন পর্যন্ত ওসি মোয়াজ্জেমের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।
ফেনীতে হত্যাকাণ্ডের শিকার মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দির ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়ানোর অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামি মোয়াজ্জেম হোসেন। মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানকে গত ৬ এপ্রিল পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টার আগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ জানাতে সোনাগাজী থানায় যান নুসরাত। থানার সেই সময়ের ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন নুসরাতকে আপত্তিকর প্রশ্ন করে বিব্রত করেন এবং তা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।
ওই ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হলে তদন্ত করে ২৭ মে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ওই দিনই তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। ২০ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি। পরোয়ানা জারির দুইদিন পর মোয়াজ্জেম হোসেন হাইকোর্টে জামিন আবেদনও করেন।
প্রসঙ্গত, আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহানকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে করা মামলায় সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয়। ৬ এপ্রিল সকালে পরীক্ষা দিতে গেলে কৌশলে তাকে ছাদে ডেকে তার গায়ে কোরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। গত ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত মারা যান।