নুসরাত হত্যা মামলার দায়িত্বে অবহেলাকারী সোনাগাজী থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে বদলি করে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করায় মানববন্ধন করেছেন রংপুরের শিক্ষার্থীরা। এ সময় হাতে জুতা নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে ওই ওসিকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন তারা। শনিবার (১১ মে) দুপুরে নগরীর লালবাগ চত্বরে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের উদ্যোগে এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তব্য দেন সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক মিলন মিয়া, উপদেষ্টা মো. আরিফ আলী, কারমাইকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পাভেল রহমান হিমেল, ছাত্র সমাজের যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুজ্জামান কামরান ও জয়নাল আবেদীন জয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যদি ডিআইজি কার্যালয় থেকে তাকে প্রত্যাহার করা না হয় তবে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। মানববন্ধন সমাবেশে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও কারমাইকেল কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। এর আগে তারা ওই এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন।
মাদরাসা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা নুসরাতকে শ্নীলতাহানি করছে- এটা জানার পরও কোনো ব্যবস্থা নেননি ওসি মোয়াজ্জেম। ২৭ মার্চ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগ করেন নুসরাত। এরপর সোনাগাজী থানার যাওয়ার পর নিয়ম ভেঙে তার বক্তব্য ভিডিও করেন ওসি মোয়াজ্জেম। ভিডিও করার সময় নুসরাত অঝোরে কাঁদছিলেন। দু'হাতে মুখ ঢেকে রাখার চেষ্টা করছিলেন তিনি। এ সময় ওসি বলতে থাকেন- 'মুখ থেকে হাত সরাও। কান্না থামাও। এমন কিছু হয়নি যে, এখনও তোমাকে কাঁদতে হবে।' নুসরাতের সঙ্গে ওসির আচরণ ছিল আপত্তিকর।
রাফির পরিবার ও সংশ্নিষ্টদের অভিযোগ, ওসির আসকারা পেয়েই সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা এলাকায় দাপট নিয়ে চলতেন। একাধিকবার অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে ছাত্রী নিপীড়নের গুরুতর অভিযোগ উঠলেও তার কোনো সুরাহা হয়নি। সাহস ও প্রতিবাদ নিয়ে রাফি রুখে দাঁড়ানোয় বেরিয়ে এসেছে সোনাগাজী ফাজিল মাদরাসা ঘিরে নানা অপকর্মের কাহিনী। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থেকেও শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত রাফি বলে গেলেন, 'আমার যাই হোক, তবু যেন দোষীরা কোনোভাবেই ছাড় না পায়। আমি এ অন্যায়ের প্রতিবাদ করব। শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত। সারা বাংলাদেশের কাছে বলব। প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলব। সারা পৃথিবীর কাছে বলব।' রাফির এমন বক্তব্যের পরও সোনাগাজীর সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম তার পরিবারকেই সন্দেহের চোখে দেখে।