কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ ও তাড়াইল উপজেলায় ১৯২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির (এসএমসি) মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। গত ২০১৭ সালের জুন মাসে বিদ্যালয়গুলোর পরিচালনা কমিটি মেয়াদ শেষ হয়। পাশাপাশি শেষ হয়ে গেছে শিক্ষক ও অভিভাবক অ্যাসোসিয়েশনের (পিটিএ) মেয়াদও। ফলে প্রায় এক বছর ধরে এসব কমিটি না থাকায় স্কুল লেভেল ইম্প্রোভমেন্ট প্ল্যান বা স্লিপ কার্যক্রম নিয়ে সমস্যায় পড়েছে বিদ্যালয়গুলো। মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় স্লিপের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে পারছেন না কমিটি ও প্রধান শিক্ষকরা। এ অবস্থায় স্লিপ কার্যক্রমের জন্য বরাদ্দকৃত প্রায় ৭৭ লাখ সরকারি টাকা ফেরত যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৩) আওতায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সারাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে স্লিপ কার্যক্রমের ব্যয় মেটাতে ১৯১ কোটি ৩২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে জেলার করিমগঞ্জ ও তাড়াইল উপজেলার ১৯২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিটির জন্য ৪০ হাজার করে মোট বরাদ্দ আসে ৭৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা। বছরে একবার সাধারণত প্রতিটি বিদ্যালয়ে এ বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয়। বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ টাকা দিয়ে বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান, বিদ্যালয়ের ছোটখাটো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করে আসছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এদিকে অধিদপ্তর বলে দিয়েছে, আগামী ৩১ মের মধ্যে স্লিপের টাকা খরচ করে বিল-ভাউচার জমা দিতে হবে।
জানা গেছে, প্রতিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা করতে ১১ সদস্যের একটি কমিটি থাকে। নিয়ম অনুযায়ী, একজন পুরুষ ও একজন নারীকে বিদ্যোৎসাহী হিসেবে নিয়োগ দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। বিদ্যোৎসাহী পাওয়ার পর স্থানীয় শিক্ষা অফিসের নির্দেশনা নিয়ে প্রধান শিক্ষক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেন। এসএমসি গঠনের পর এ কমিটি আবার শিক্ষক-অভিভাবক অ্যাসোসিয়েশন গঠনের উদ্যোগ নেয়।
করিমগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম তালুকদার স্লিপের টাকা ফেরত যাওয়ার আশঙ্কার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, তাদের আশা জটিলতা কাটিয়ে তারা টাকা পাবেন।
কিশোরগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, শুধু স্লিপের টাকা নয়, বিদ্যালয়কেন্দ্রিক যত কার্যক্রম রয়েছে সব কিছুর জন্য কমিটি অতি প্রয়োজন। তিনি দাপ্তরিক ও ব্যক্তিগতভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন করিমগঞ্জ ও তাড়াইল উপজেলায় কমিটিগুলো যেন হয়ে যায়।
কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনের সংসদ সদস্য, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, তিনি বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তি নিয়ে রয়েছেন মহাঝামেলায়, এলাকার সবাই বিদ্যোৎসাহী হতে চান। কাকে বাদ দেব আর কাকে রাখব। এ নিয়ে বেকায়দায় আছি। তাই তালিকাটির অনুমোদন দিতে একটু সময় লাগছে। তবে আশা করি, স্লিপের টাকা ফেরত যাবে না। বিষয়টি নিয়ে অবহিত রয়েছি।