করোনা : বরখাস্ত চিকিৎসকদের সুযোগ ‘এখনও আছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক |

ঢাকার উত্তরার কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের বরখাস্ত ছয় চিকিৎসকের কাজে ফেরার সুযোগ এখনও রয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা।

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে অপারগতা প্রকাশ এবং কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার কারণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরই শনিবার সরকারি হাসপাতালটির ওই চিকিৎসকদের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দিয়েছিল।

যে দুজনের বিরুদ্ধে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা দিতে অনীহার অভিযোগ উঠেছে, তারা সেই অভিযোগ অস্বীকার করার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের কাজে ফেরার সুযোগ থাকার কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. নাসিমা সুলতানা।

বৈশ্বিক মহামারিতে রূপ নেয়া ছোঁয়াচে রোগ কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব বাংলাদেশে ঘটার পর এই রোগীদের চিকিৎসার জন্য শুরুতেই কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালকে নির্দিষ্ট করা হয়।

শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ওই হাসপাতালটির ছয় চিকিৎসককে সাময়িক বরখাস্ত করে।

অধিদপ্তরের আদেশে বলা হয়, কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেস্থেশিয়া) হীরম্ব চন্দ্র রায় এবং মেডিকেল অফিসার ফারহানা হাসানাত, উর্মি পারভিন ও কাওসার উল্লাহর বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেওৎয়া হয়েছে। আর করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করায় হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনী) শারমিন হোসেন এবং আবাসিক চিকিৎসক মুহাম্মদ ফজলুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এরপর আত্মপক্ষ সমর্থনে ফেইসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন ডা. শারমিন, যাতে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন।

তিনি বলেন, “আমাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। কেন সাসপেন্ড করা হয়েছে, তা আমি কিছুই জানি না। আমার রোস্টার ছিল- ১ থেকে ৭ এপ্রিল। এ সময় আমি টানা রোস্টার করে ৭ এপ্রিল নাইট করে ৮ এপ্রিল সকালে বাসায় গিয়েছি।”

“৯ এপ্রিল আমার তত্ত্বাবধায়ক স্যার আমার সঙ্গে কোনোরূপ যোগাযোগ না করে আমার বিরুদ্ধে উনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে নাম পাঠিয়েছেন- আমি নাকি কোভিড ১৯ রোগীদের চিকিৎসা দিতে রাজি নই অথবা ইচ্ছুক নই। আমি এ ধরনের কোনো কথা লিখিত বা মৌখিকভাবে স্যারের কাছে বা কারো কাছে প্রকাশ করেছি বলে আমার জানা নাই।”

শারমিন বলেছেন, “আমি যখন জানলাম তখন আমি সাসপেন্ড। পরে স্যারের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করি- আমি কী এমন বলেছি আমি ডিউটি করতে ভয় পাচ্ছি বা ইচ্ছুক না?..স্যার বলেছেন- ‘সরি, এটা ভুল হয়ে গেছে। ঠিক করে দিচ্ছি’।”

আরেক চিকিৎসক মুহাম্মাদ ফজলুল হক শনিবার একাত্তর টেলিভিশনের একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, তিনি কখনই চিকিৎসা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেননি। ৩১ মার্চ পর্যন্ত ফোকাল পারসন হিসেবে কাজ করেছেন। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে রোস্টার করতে অনুরোধ করলে তাকে ১৫-২১ এপ্রিল রোস্টার দেয়া হয়।

ডা. ফজলুল বলেন, একটি হোটেলে অবস্থান করে দুর্যোগে সেবা দেয়ার জন্য নিজেকে তিনি প্রস্তুত করেছেন। নিজেকে কোয়ারেন্টিনে রেখেছেন।

“কখনও দায়িত্বপালনে অনীহা প্রকাশ করিনি। রোস্টার ডিউটি না থাকলেও হাসপাতালে গেছি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে কখনও ইনফরম করেনি। বরখাস্তের খবরে আমি মানসিকভাবে অত্যন্ত কষ্ট পাই। আমি হেয় হই। এর সুবিচার চাই।”

তাদের বক্তব্যের বিষয়ে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল থেকেই ওই চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছিল, যার ভিত্তিতে অধিদপ্তর ব্যবস্থা নিয়েছে।

তবে সাময়িক বরখাস্তরা এখন আবেদন করলে তা বিবেচনার সুযোগ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “ইনফরমেশনে কোনো গ্যাপ থাকতেও পারে।

“আর এটা তো সাময়িক বরখাস্ত, এমন না যে তারা পার্মানেন্ট বরখাস্ত হয়েছেন। এটা যে কোনো সময়ই ইয়ে …. হতে পারে।”


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0048689842224121