করোনা : শিক্ষকদের একদিনের বেতন জমাদানের সময় বাড়ানোর দাবি

মুরাদ মজুমদার |

করোনার এই মহামারীতে অসহায় মানুষকে সাহায্য করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে বেসরকারি শিক্ষকদের একদিনের বেতন দান করার সিদ্ধান্তকে সময়োপযোগী বলেছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। কিন্তু টাকা সংগ্রহ ও জমাদানের পদ্ধতিগত জটিলতায় পড়েছেন তারা। একদিনের বেতন সংগ্রহ ও জমাদানের জন্য সময় বৃদ্ধি করার দাবি জানিয়েছেন তারা। গত ৭ এপ্রিল শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকম’র ফেসবুক লাইভে ও প্রতিবেদন দেখে সারাদেশের প্রায় পাঁচ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী জানতে পারেন ৯ এপ্রিলের মধ্যে টাকা দিতে হবে। সরকারি সিদ্ধান্ত জানার পরপরই মাঠ পর্যায়ে টাকা চাওয়া শুরু করেছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসাররা। সরকারি হাইস্কুল ও কলেজের শিক্ষকরা ১  এপ্রিল বেতন পেয়েছেন এবং তারা যথারীতি প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে টাকা দিয়েছেন। কিন্তু অধিকাংশ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী ৮ এপ্রিল পর্যন্ত মার্চের বেতন পাননি। 

এ অবস্থায় সারাদেশের শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাকে জানিয়েছেন তাদের দাবির কথা। তারা চান টাকা সংগ্রহ ও জমাদানের জন্য সময় বৃদ্ধি করা হোক। এর স্বপক্ষে তারা কয়েকটি যুক্তি দেখিয়েছেন। এগুলো হচ্ছে: এক. স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের বেতন-ভাতার চেক ছাড় হয়েছে দেরিতে। ১২ ও ১৩ এপ্রিলের তারিখের আগে কেউই টাকা পাবেন না। তাহলে ৯ এপ্রিলের মধ্যে একদিনের বেতন দেবেন কিভাবে? দুই. একদিনের টাকা জমা দেয়ার সরকারি আদেশটি স্কুল ও কলেজ শিক্ষকদের জন্য শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জারি হয়েছে। মাদরাসা ও কারিগরি অধিদপ্তর ৮ এপ্রিল সন্ধ্যা অব্দি জারি করেনি। তিন. শিক্ষক নেতারা বলছেন বেতন অথবা বৈশাখী ভাতা থেকে একদিনের বেতনের সমপরিমান টাকা কর্তন করে বেতন ছাড় করলে খুব ভালো হতো। শিক্ষক নেতারা দৈনিক শিক্ষাকে বলছেন, মহাপরিচালক যদি নেতাদের সাথে আলোচনা করে নিতেন তাহলে অতীতের অভিজ্ঞতার আলোকে একদিনের বেতনের সমপরিমান টাকা সংগ্রহ ও জমা দিতে পারতেন।  

বাংলাদেশ অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি প্রবীণ শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মাজহারুল হান্নান বলেন, করোনার বৈশ্বিক মহামারীর সময় দেশের শিক্ষক সমাজ দরিদ্র মানুষের সহায়তায় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে একদিনের বেতন দান করবেন এটাই খুবই ভালো সিদ্ধান্ত। তবে, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতনের চেক কবে ছাড় হয় আর কবে হাতে পান এ বিষয়ে শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা পুরোপুরি অবগত নন। তাই হয়তো মার্চের বেতন এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের হাতে যাওয়ার আগেই টাকা জমাদানের আদেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে আদেশ জারির আগে শিক্ষক নেতাদের সাথে কথা বলে নিলে পদ্ধতিগত জটিলতা এড়ানো যেত। যাহোক, শিক্ষা অধিদপ্তরের আদেশটি সংশোধন করে সময় বৃদ্ধির পরামর্শ দেন প্রবীণ এই শিক্ষক নেতা।

বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজী দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, অনেক জায়গায় শিক্ষা কর্মকর্তারা অধ্যক্ষ ও সুপারদের কাছে টাকা চাচ্ছেন। অথচ, মাদরাসা অধিদপ্তর থেকে একদিনের টাকা দেয়ার আদেশই জারি হয়নি। অতীতে বিভিন্ন সময়ে আমরা একদিনের বেতন প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে দিয়েছি। সেক্ষেত্রে আমাদের সাথে আগে আলাপ করলে সুন্দর উদ্যোগটি সুন্দরভাবে বাস্তবায়ন করা যেত। এখন সময় বৃদ্ধি না করলে হ-য-ব-র-ল হবে।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির নতুন সভাপতি সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. কাওছার আলী শেখ ৮ এপ্রিল বিকেলে বলেন, করোনার মহামারিতে অসহায় মানুষের জন্য শিক্ষকদের একদিনের বেতন দেয়ার সিদ্ধান্তটি খুবই ভালো হয়েছে। একইসাথে তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় কিংবা অধিদপ্তর যদি নেতাদের সাথে আলাপ করে নিতেন তাহলে টাকা সংগহের এই জটিলতা তৈরি হতো না। ৯ এপ্রিলের পরিবর্তে ১৫ বা ১৬ এপ্রিল করা হোক।

শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের নেতা অধ্যক্ষ মো: আসাদুল হক, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: মহসীন রেজাও টাকা সংগ্রহ ও জমসাদানের জন্য সময় বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির মো: নজরুল ইসলাম রনি বলেছেন,  ৮ এপ্রিল তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষকের একদিনের বেতন মোট ২৭ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037429332733154