করোনাকালে প্রাইমারি শিক্ষার্থীদের পঠনদক্ষতা বৃদ্ধিতে করণীয়

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

শিশুদের পঠনদক্ষতা সম্পর্কে কিছু বলার আগে দেখা যেতে পারে এ নিয়ে বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্টজনরা কি বলেন। এর জন্য একটু পেছনে যেতে হবে। ঢাকার কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে ২০১৮ সালের ২০ জানুয়ারি ‘মাতৃভাষার পঠনদক্ষতা : মানসম্মত শিক্ষার ভিত্তি’ শিরোনামে এক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় (প্রথম আলো ২১ জানুয়ারি ২০১৮)। এ বৈঠকের আলোচনায় যেসব তথ্য উঠে এসেছিল তা এ রকম, তৃতীয় শ্রেণীর ৩৫ শতাংশ শিক্ষার্থী শ্রেণী মান অনুযায়ী বাংলা পড়তে পারে না। পঞ্চম শ্রেণীতে তা বেড়ে হয় ৭৭ শতাংশ। মাতৃভাষায় স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে পড়া ও লেখার সক্ষমতা অর্জনে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর দশম শ্রেণী পর্যন্ত লেগে যায়। বলা হয়, মাতৃভাষায় পঠনদক্ষতা মানবসম্পদ তৈরিতে ভূমিকা রাখে। ভবিষ্যৎ কর্মদক্ষতার ওপরও প্রভাব ফেলে। শুক্রবার (১০ জুলাই) দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে এ তথ্য জানা যায়। 

সম্পাদকীয়তে আরও জানা যায়, মাতৃভাষায় সাবলীলভাবে পড়তে না পারলে শিক্ষার ভিত শক্ত হয় না। আরো বলা হয়, আমাদের শিশুদের পঠনদক্ষতা কতটুকু হবে অর্থাৎ কোন শ্রেণীর শিশু মিনিটে কতটি শব্দ বুঝে পড়তে পারলে সেটা মানসম্মত হবে, সেই মাপকাঠি আমাদের যথাযথ গবেষণার মাধ্যমে নির্ধারণ করতে হবে’। আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসে যেমন বলা হয়, দক্ষতার সঙ্গে পড়তে পারা শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেলে এটা দশমিক ৩ শতাংশ জিডিপি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে’। অন্যদিকে বিশ্বব্যাংক ফেব্রুয়ারি’ ১৯-এর এক প্রতিবেদনে বলে, বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা চার বছর পিছিয়ে আছে। প্রথম শ্রেণীতে যা শেখার কথা তা শিখছে পঞ্চম শ্রেণীতে গিয়ে। ১১ বছরের স্কুলজীবনে ৪ বছরই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তাদের’। তাহলে বোঝা যাচ্ছে শিক্ষার মান বাড়াতে হলে পঠনদক্ষতার বৃদ্ধি ঘটাতে হবে। এই যে বলা হলো, আমাদের শিশুদের পঠনদক্ষতা কতটুকু হবে অর্থাৎ কোন শ্রেণীর শিশু মিনিটে কতটি শব্দ বুঝে পড়তে পারলে সেটা মানসম্মত হবে, সেই মাপকাঠি আমাদের যথাযথ গবেষণার মাধ্যমে নির্ধারণ করতে হবেÑ এর অর্থ, ওই মাপকাঠি আজও নির্ধারিত হয়নি।

এখন আমাদের শিক্ষার্থীরা ঘরে থাকছে। স্কুলে যাচ্ছে না কোচিংয়ে যাচ্ছে না বাসায়ও শিক্ষক আসছেন না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে, বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। এর শেষ কোথায় কেউ জানে না। খুবই সংবেদনশীল ছোঁয়াচে রোগ কভিড-১৯। আক্রান্তের সংস্পর্শে গেলেই অন্যরা আক্রান্ত হচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে বলা হচ্ছে সবাইকে যেটা শিশুদের পক্ষে স্কুলে উপস্থিত থেকে বজায় রাখা অসম্ভবই বলতে হবে। কাজেই শিশুদের লেখাপড়ার ক্ষতি হচ্ছে দেখে স্কুল খুলে দেয়ার আগে কর্তৃপক্ষকে হাজার বার ভেবে দেখতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শিশুরা যাতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত না হয় সেজন্য এখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলা হবে না। পরিস্থিতির উন্নতি হলে পর্যায়ক্রমে খুলে দেয়া হবে’। পরিস্থিতি কত দিনে স্বাভাবিক হতে পারে তা যেহেতু অজানা তাই পরের কথা পরে। এখন এ দিনগুলোতে ওদের ওই পঠনদক্ষতা বৃদ্ধির একটা উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে অভিভাবকদের উদ্বুদ্ধ করে। আজকাল সব পরিবারেই রয়েছে লেখাপড়া জানা লোকজন। আইএ বিএ এমএসহ অন্যান্য ডিগ্রিধারীর কোন অভাব নেই। এতদিন অভিভাবক মহোদয়রা তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য শুধু টাকার জোগান দেয়া ছাড়া আর কিছু তেমন করতে পারেননি, যা করার করেছেন শিক্ষক মহোদয়রা-কোচিংওয়ালারা আর করেছেন দেশের সরকার। সরকারের কিছু ভালো পদক্ষেপের কারণে আজ দেশের সব শিশু স্কুলমুখী। এ এক বিরাট সাফল্য। তার মধ্যে রয়েছে বিনা মূল্যে সবাইকে পাঠ্যবই দেয়া গরিব পরিবারের সন্তানদের উপবৃত্তি দেয়া এবং কোন কোন এলাকার স্কুলে টিফিন দেয়া ইত্যাদি। এখন সবাই ঘরে থাকলেও পরিবারের বড়রা ওদের কেবল পড়ো পড়ো বলা ছাড়া আর কিছু করতে পারছেন না। কেউ হয়তো আগে দু’একদিন পড়াতে বসেছেন এবং দেখে-শুনে বুঝেছেন এটা তার দ্বারা হবে না। কেউ হয়তো কষ্ট করেও দেখেছেন কিন্তু সেটা জায়গা মতো অর্থাৎ স্কুলে গ্রহণযোগ্য হয়নি। পরে ওই কোচিং নির্ভর, পরীক্ষা নির্ভর লেখাপড়ার কাছে ছেড়ে দিতে হয়েছে সন্তানের লেখাপড়ার ভার। ফলে এখন চাইলেও কিছু করতে পারছেন না তারা। বুঝতে পারছেন না কী পড়াবেন কীভাবে পড়াবেন। দেখা যাচ্ছে প্রাইভেট প্রাইমারি স্কুলগুলোর শিক্ষক মহোদয়রা মোবাইল ফোনের ছোট্ট স্ক্রিনের চার ভাগের এক ভাগে নিজের চেহারা দেখিয়ে ক্লাস নিচ্ছেন একটার পর একটা ওয়ান থেকে শুরু করে অন্যান্য শ্রেণীর। অভিভাবক মহোদয়রা ভাবছেন তবু লেখাপড়াটা চালু থাক। তবে আমার মনে হয় এভাবে ওদের পরীক্ষার পড়া, পাশের পড়া না পড়িয়ে বই দেখে পড়তে বলুন, আপনি শুনুন ওপার থেকে। দেখুন ঠিক মতো পড়তে পারছে কি না। পড়তে পারলেই হবে। এতে ওদের ওই পঠনদক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। আমরা সাদা চোখে যেটা বুঝি, পড়তে পড়তেই না পঠনদক্ষতা বৃদ্ধি পায়। যত পড়বে ততই শব্দভা-ার বাড়বে। যত বেশি বেশি উচ্চারণ করে পড়বে ততই না উচ্চারণ শুদ্ধ হয়ে আসবে।

সম্মানিত অভিভাবকদের কাছে আসি যারা এই পঠনদক্ষতা বৃদ্ধির কাজে সবচেয়ে ভালো অবদান রাখতে পারেন এ দুঃসময়ে। তবে কাজটা করতে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ থেকে বারবার আহ্বান জানাতে হবে অভিভাবকদের। বলতে হবে, আপনারা আপনাদের সন্তানদের নিয়ে বসুন। ওদের সঙ্গে কথাবার্তার অংশীদার হোন। আপনাকে অধিক লেখাপড়া জানা লোক হতে হবে এমন কোন কথা নেই। আপনাকে পরীক্ষার পড়া পড়াতে হবে না পাশের পড়াও পড়াতে হবে না। সেটা সময়ে কর্তৃপক্ষ বুজবে। প্রথমে যেটা করবেন, পড়তে বলবেন। সে পড়বে আপনি শুনবেন। ঠিক মতো পড়তে পারলে সব পারবে। নোট-গাইডগুলো আগে সরিয়ে রাখুন। আপনি তো পরীক্ষার পড়া পড়াচ্ছেন না। কাজেই ওগুলো না হলেও চলবে। শিক্ষার্থীকে বুঝতে না দিয়ে আপনি দেখবেন মিনিটে সে কতটা শব্দ, শব্দ করে পড়তে পারল। সেটা কতটা মানসম্মত হলো না হলো তা আপনি আন্দাজ করতে পারবেন। আমাদের শিশুদের পঠনদক্ষতা কতটুকু হবে অর্থাৎ কোন শ্রেণীর শিশু মিনিটে কতটি শব্দ বুঝে পড়তে পারলে সেটা মানসম্মত হবে, সেই মাপকাঠি যেহেতু আমাদের জানা নেই, তাই নিজেদেরই বুঝে নিতে হবে। আপনিও পারবেন বুঝতে।

আমার কথা প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত লেখাপড়া নিয়ে। আগেও বলেছি, আমার যা একটু লেখালেখি তা ওই প্রাথমিক শিক্ষাকে ঘিরে। শিশুদের লেখাপড়া নিয়ে লিখালিখি করে আসছি তাও কম বছর হলো না। তাই বলছি যদি দেখেন তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কেউ মিনিটে ৩০-৪০টা শব্দ উচ্চারণ করে পড়তে পারে তার বই দেখে (মুখস্ত করা কবিতা ছাড়া) তাহলে ধরে নিতে পারেন ঠিক আছে। দেখবেন কেউ বেশিও পারবে কেউ হতাশ করবে। আগেই আপনাকে বলে রাখি এটা করতে গিয়ে আপনি চরমভাবে হতাশও হতে পারেন যা আপনি ভাবতে পারেননি। এমন হলে ধৈর্য হারাবেন না। কাউকে দোষারোপ করবেন না। বাসার কারও প্রতি অভিযোগ করবেন না। শিক্ষার্থীদের তো কিছু বলবেনই না। আপনি কাজটা ধৈর্য সহকারে করতে থাকবেন। মনে রাখতে হবে আমাদের কথা ভালে কম ভালো সব ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে।

অভিভাবকদের আরও যেটা করতে আহ্বান করা যেতে পারে তাহলো, আপনি নিজের থেকে হোক ওদের পাঠ্যবই থেকে হোক বা অন্য কোন লেখা থেকে হোক খুব সহজ শব্দ ব্যবহার করে ছোট ছোট বাক্যে লিখতে বলবেন। আপনি বলবেন, সে লিখবে। একটা বাক্য দুইবারের বেশি বলবেন না। বেশি না ৮-১০টা বাক্য বা এক পৃষ্ঠার বেশি করাবেন না একবারে। দাগ টানা খাতায় লিখাবেন। বিশেষ কয়েকটা অক্ষর এবং কয়েকটা ‘কার চিহ্ন’ ছাড়া দাগের বাইরে যাবে না। অক্ষরগুলো লিখবে গায়ে গায়ে আর শব্দগুলো হবে ফাঁক ফাঁক। ইংরেজি বিষয়েও একই কাজ করবেন। ইংরেজিটা বাংলার মতো না হোক কাছাকাছি থাকলেই হবে। আমাদের মূল কথা মাতৃভাষা নিয়ে আগে যেটা বলা হয়েছে। কাজটা করতে ওদের পাঠ্যবই ব্যবহার করতে পারেন নাও করতে পারেন। উদ্দেশ্য, ওরা যাতে ভালোভাবে পড়তে ও লিখতে পারে সে ব্যাপারে পরিবার থেকে সহযোগিতা করা। পঠনদক্ষতা বৃদ্ধি করা। পাঠ্যবই দেখে পড়বে আপনি শুনবেন। প্রাথমিক পর্যায়ের হোক বা তার দু-এক ক্লাস ওপরের হোক একটা শিশু ঠিক মতো পড়তে পারলে সব পারবে। লিখতেও পারবে। বলতে চাচ্ছি, মাননীয় অভিভাবক, করোনাভাইরাসের এ আতঙ্ককালে ঘরেই তো কাটছে আপনার বেশিরভাগ সময়। কাজে লাগান। একটু কষ্ট করুন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য। না পারার কোন কারণ নেই। আপনি পারবেন। পরিবারের অন্যরাও পারবেন। দেখা যাবে অনেক বড় একটা কাজ হয়ে গেছে আপনার দ্বারা। যেমন একটা সময় আসবে ঠিকই যখন দেখা যাবে এই মহামারীর এই আতঙ্কের ভেতর থেকেও নানান দিকে নানা রকম সৃষ্টিশীল কর্ম বেরিয়ে এসেছে এই ঘরে বসে থাকার কারণে। আপনিও তার শরীক হোন। যাহোক এসব কথা অভিবাববকদের উদ্দেশে বারবার বলা গেলে কাজ তো কিছু অবশ্যই হবে।

বাংলাদেশ টেলিভিশন এক সময় বিএড কোর্স চালু করেছিল দূরপ্রশিক্ষণ প্রোগ্রামে। অনেকে এ পদ্ধতিতে বিএড ডিগ্রিও নিয়েছিলেন। এখন হাতে হাতে পৌঁছে গেছে ডিজিটাল প্রযুক্তি। বর্তমান পরিস্থিতির কারণে স্কুলের শিক্ষার্থীদেরও অনলাইনে লেখাপড়া করানো হচ্ছে। শিক্ষার জন্য সময়োপযোগী নিয়মনীতি-পদ্ধতি সবই গ্রহণ করতে হবে ওদের জন্য এতে কারও দ্বিমত থাকতে পারে না। তবে করোনাকালের ছুটির এ দিনগুলো না হয় ওরা পরীক্ষার পড়া থেকে বিরত থাক। সময়টা ওদের পঠনদক্ষতা বৃদ্ধির কাজে সহায়ক হোক এবং হোক সেটা সবার পরিবার থেকেই।

 

লেখক :  আবদুল মান্নান খান


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.013070106506348