করোনাকালে শিক্ষার ক্ষতি পোষাতে

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

বিগত ছয় মাস ধরে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্বস্তিকর। এ এক বিরাট ক্ষতি। শিক্ষার্থীদের ওপর মানসিক চাপ পড়েছে অনেক। ইংরেজী মাধ্যম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো অনলাইনে পাঠদান শুরু করেছে বেশ পরে। সার্বিকভাবে শিক্ষাক্ষেত্রের এই চরম সঙ্কটের ভেতর ধীরে ধীরে স্বস্তিকর সংবাদ পাচ্ছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকবৃন্দ। সরকারের ইতিবাচক উদ্যোগের ফলে শিক্ষার্থীদের মনে আশার সঞ্চার হয়েছে। বিশেষ করে এসএসসিতে উত্তীর্ণ হয়ে যেসব শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তির জন্য উদগ্রীব ছিল তাদের জন্য সুসংবাদ মিলেছে। শুরু হয়েছে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির অনলাইন প্রক্রিয়া। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে এ তথ্য জানা যায়।

সম্পাদকীয়তে আরও জানা যায়, নতুন ক্লাসের পড়া শুরুর জন্য তরুণ শিক্ষার্থীরা উদগ্রীব হয়ে আছে। আমরা মনে করি দেশের বিপুল সংখ্যক তরুণ শিক্ষার্থীর জন্য সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে সেটি পরম স্বস্তিকর। করোনার আঘাত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পড়েছে দেশ, সমাজ ও মানবজীবনের প্রতিটি স্তরে। এর কোন ক্ষতিই সামান্য নয়। অসামান্য ক্ষতি হয়ে গেছে শিক্ষাঙ্গনে, স্পষ্ট করে বললে শিক্ষার্থীদের। বাধ্যতামূলক ঘরবন্দী থাকায় এবং করোনার উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কারণে শিক্ষার্থীদের মনোজগতে চাপ তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে নিয়মিত পাঠ গ্রহণের বাধ্যবাধকতা না থাকায় এবং এ ব্যাপারে জবাবদিহির অনুপস্থিতি তাদের মধ্যে এক ধরনের শিথিলতাও এনে দিয়েছে। বেশিদিন শিক্ষালয়ে না যেতে পারা মানেই সামাজিকভাবে শিক্ষার ব্যত্যয় ঘটা। সেটিই হয়েছে, যা শুধু শিক্ষার্জন নয়, মানসিক স্বাস্থ্য ও সামাজিক সম্পর্কের জন্যও সমস্যা। একই সঙ্গে বার্ষিক পাঠ্যসূচী সম্পন্ন না থাকার বিষয়টিও বিদ্যমান।

রবিবার জনকণ্ঠে দেশের শিক্ষাক্ষেত্রের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে একটি আশাব্যঞ্জক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। যা জনমনে স্বস্তি এনে দেবে বলে আমাদের বিশ্বাস। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আগামী মাস থেকেই বিশেষ প্রকল্প ‘বাংলাদেশ কোভিড-১৯ স্কুল সেক্টর রেসপন্স’ এর কাজ শুরু করতে চায় সরকার। ১২৬ কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার এ প্রকল্পের আওতায় অন্তত ২০ হাজার স্কুলে নেয়া হবে করোনার ফলে সৃষ্ট ক্ষতি সামাল দেয়ার উদ্যোগ। শিক্ষার্থীদের হাত ধোয়া থেকে শুরু করে উপজেলা থেকে বাছাই করা শিক্ষকদের দেয়া হবে প্রশিক্ষণ। শিক্ষা গ্রহণে তৈরি করা হবে নতুন ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম। ইতোমধ্যেই পরিকল্পনা কমিশনে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। আশা করা যায় দ্রুতই গুরুত্বপূর্ণ এ কর্মসূচী শুরু হবে।

প্রকল্প অনুযায়ী নতুন শিক্ষাবর্ষে বিদ্যালয়ে ভর্তি, শিক্ষার্থী মূল্যায়ন (পরীক্ষা) ও লেখাপড়ার ক্ষতি পূরণে সহায়তা, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা সেবা দেয়া, বর্তমান ও ভবিষ্যত সঙ্কট মোকাবেলার জন্য বিদ্যালয়গুলোতে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করা, দূরশিক্ষণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা এবং বিদ্যালয়ের সঙ্গে দূরশিক্ষণ কার্যক্রম একীভূত করা হবে। প্রথম থেকে দশম শ্রেণীর পুরো শিক্ষাবর্ষের জন্য পূর্ণাঙ্গ ও যথাযথ ডিজিটাল কনটেন্ট সমৃদ্ধ ৩৫টি বিষয়ের কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। আমরা আশাবাদী করোনায় শিক্ষাঙ্গনে যে ক্ষতি সাধিত হয়েছে, তা অনেকটাই পুষিয়ে নিতে এই বিশেষ প্রকল্প ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতা, দক্ষতা ও আত্মনিয়োগ যে অত্যাবশ্যক সেকথা বলাই বাহুল্য।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের - dainik shiksha পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার - dainik shiksha ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026710033416748