করেনার প্রভাবে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে সরকার। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরিস্থিতি কেমন হবে কেউ বলতে পারে না। আমাদের গ্রামের স্কুলের শ্রেণিকক্ষে শিশুরা অনেক কষ্টে গাদাগাদি করে বসে। যা সামলাতে হিমসিম খেতে হয় শিক্ষকদের। দূরত্ব বজায় রাখা এখানে সম্ভব হবে না। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া ঠিক হবে না। শনিবার (১১ জুলাই ) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যয়
নিবন্ধে আরও জানা যায়, করোনা ভাইরাসে শিশুরা কম আক্রান্ত হলেও নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অসহায় শিশুরা চাপে আছে। বর্ষার সময় শিশুদের সর্দি-কাশির নানা সমস্যার কারণে বাবা-মা চিন্তায় আছেন। ঘরে বসে সন্তানদের প্রাণবন্ত রাখতে বাবা-মায়েদের কষ্ট হচ্ছে। ঝুঁকিতে আছে শিক্ষকরাও। সৃষ্ট সমস্যার সমাধান করতে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে সরকারের বিশেষ পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করছেন শিক্ষকরা। শিক্ষকরা ক্লাশ ভাগ করে প্রতিদিন ৫ থেকে ১৫ জন মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে পাঠদান করছেন।
প্রধানশিক্ষক সপ্তাহের একদিন স্কুলের সব শিক্ষককে কাজগুলো চার্ট আকারে ক্লাস্টারের উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার বরাবরে পঠিয়ে দিচ্ছেন। এভাবেই উপজেলা থেকে জেলা ও জেলা থেকে বিভাগের কর্মকর্তারা শিক্ষার কাজে যুক্ত হচ্ছেন। বাড়িতে পাঠদানের মাধ্যমে শিশুদের পড়াশোনায় নিবিষ্ট রাখা যায়। এতে শিক্ষার্থীরা মনোযোগী হচ্ছে। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে পাঠের মূল্যায়ন করছেন। ঘরে বসেই শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়ার কথা ভাবছে সরকার।
বিশেষ ছুটির এই সময় খুদে শিক্ষার্থীর শিক্ষক তাঁর মা। শিক্ষকদের মোবাইলফোনের বার্তা অনুযায়ী সন্তানদের পড়াশোনা করাচ্ছেন মা। এতে বাবা-মা অনেকটা চিন্তামুক্ত। মোবাইলফোনের শিক্ষা কার্যক্রমে এগিয়ে আছে প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুল বন্ধকালীন সময়ে শিক্ষার্থীরা সংসদ টেলিভিশনের মাধ্যমে বিষয়ভিত্তিক ক্লাশ দেখার সুযোগ পাচ্ছে। বাড়ির কাজও দেওয়া হচ্ছে। তবে রুটিন অনুযায়ী টিভির ক্লাশে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আগ্রহ কম।
শিক্ষার্থীদের নিয়ে এত চেষ্টার পরেও করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অর্ধেক কমে গেছে। বাড়িতে শিশুরা মোবাইলফোন-ইন্টারনেটের আসক্তিতে জড়িয়ে পড়ছে। শিশুদের আচরণগত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বইয়ের প্রতি মনোযোগ নেই। শিশুদের স্মার্টফোন থেকে দূরে রাখতে হবে। খেলাধুলা নিশ্চিত করতে পারলে আসক্তি কমবে। তবে তথ্যপ্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার জানলে সুফল আসবে। এই সময় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এমন খাবার গ্রহণে শিশুদের উত্সাহিত করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মনে রাখতে হবে—সীমাবদ্ধতা নিয়েই বিকল্প উপায়ে শিশুদের এগিয়ে নিতে হবে।
লেখক : জয়নুল আবেদীন স্বপন, গাজীপুর।