করোনার ছুটিতে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষাবাণিজ্য : ছাত্র ফ্রন্টের তীব্র প্রতিবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

দেশ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে প্রাইভেট পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কোনো ধরনের মূল্যায়ন পরীক্ষা ছাড়াই পরবর্তী সেমিস্টারে শিক্ষার্থীদের উত্তীর্ণ করা ও ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই সামার সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক এবং তা যে কোনোভাবে মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যকেই প্রতিফলিত করে বলে দাবি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতাদের। একই সাথে এ ধরনের কার্যকলাপ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারা।

জানা যায়, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইউনিভাসিটিসহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র না পড়িয়ে পরের সেমিস্টারে প্রমোশন ও পরীক্ষা ছাড়াই ভর্তি করছে। 

বুধবার (৮ এপ্রিল) দৈনিক শিক্ষা ডটকম এ পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব দাবি জানান সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারা।

ছাত্রসংগঠনটির সভাপতি অরূপ দাস শ্যাম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, সারাদেশের মানুষ অঘোষিত লকডাউনের কারণে চরম অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে জীবনযাপন করছে। সরকার ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বন্ধ ঘোষণা করলেও অনেকেরই ধারণা, ঈদের পর ছাড়া ক্লাস-পরীক্ষা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। একজন শিক্ষার্থীর একটা নির্দিষ্ট বিষয়ে ন্যূনতম জ্ঞান অর্জনের সুযোগই হলো না, অথচ তাকে পরবর্তী সেমিস্টারে অটো-প্রমোটেড করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হলো। এটা কতখানি যৌক্তিক? টাকার বিনিময়ে সার্টিফিকেট বিক্রি ছাড়া এটাকে আর কিছু বলা যায় না। ইউজিসি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে নির্দেশনা দিলেও তার তোয়াক্কা না করে স্বেচ্ছাচারীভাবে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সারাদেশে উচ্চশিক্ষার সংকট কতটা তীব্র তা অনেকেই জানেন। হাজার হাজার শিক্ষার্থী প্রতিবছর এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও স্বল্পসংখ্যক শিক্ষার্থী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির সুযোগ পায়। এদিকে সরকার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোকে অকেজো ও সেশনজটের মহারণ্যে পরিণত করে রেখেছে। ফলে একরকম বাধ্য হয়েই লাখ লাখ টাকা খরচ করে প্রতিবছর একটা বিরাট সংখ্যক শিক্ষার্থী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হয়। হাতে গোনা কয়েকটির কথা বাদ দিলে বেশিরভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নামেমাত্র শিক্ষা দানের মাধ্যমে সার্টিফিকেট বিতরণের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। যে কোনো প্রকারে মুনাফালাভই তাদের উদ্দেশ্য। এই সময়ে সামার সেমিস্টারে ভর্তি নেয়ার বর্তমান সিদ্ধান্ত তারই ধারাবাহিকতা। সারাদেশে জরুরি পরিষেবা ছাড়া সবকিছু যখন বন্ধ আছে, ঠিক এই সময়ে এই দুটি সিদ্ধান্তই অমানবিক, অনৈতিক ও স্বেচ্ছাচারিতামূলক। 

তাই, বিবৃতিতে অবিলম্বে পরীক্ষা ছাড়া পরবর্তী সেমিস্টারে উত্তীর্ণ করা ও ভর্তি প্রক্রিয়ার নামে শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধের জন্য সরকারি পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারা।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035679340362549