করোনার কারণে দেখা দেওয়া মন্দায় বন্ধ হয়েছে অনেকের আয়-উপার্জন, পাল্টে যাচ্ছে পেশা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ছাত্র-ছাত্রীরাও পড়েছে বিপাকে। অনেক শিক্ষার্থীই ক্যাম্পাসে থাকা অবস্থায় দু-একটি টিউশনি করে খরচ চালিয়ে নিতেন। কিন্তু বাড়িতে চলে আসায় বন্ধ সেই আয়ের পথ। এমন অবস্থায় পেটের দায় আর খরচের জোগান মেটাতে বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্র শান্ত এখন দোকান কর্মচারীর কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন।
শেরপুরের শ্রীবরদীর চাউলিয়া গ্রামের দরিদ্র রিকশাচালকের পাঁচ সদস্যের পরিবারে সবার ছোট আব্দুর সাত্তার শান্ত। চোখে বড় হওয়ার স্বপ্ন থাকলেও দারিদ্র্য ছিল বড় বাধা। গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে স্নাতক শেষবর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত।
গত ২০ মার্চ থেকে বাড়িতে থাকা শান্ত কাজ খুঁজতে থাকেন। পরিচিত অনেকের কাছে কাজের জন্য ধরনা দেন। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। অবশেষে গত ২৮ মে থেকে বাড়ির পাশের চাউলিয়া বাজারে একটি মোবাইল রিচার্জ-কাম ওষুধের দোকানে কর্মচারীর কাজ নেন। ওই দোকান মালিক তাঁকে কিছু টাকা দেবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। এখন প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সেই দোকানে কর্মচারীর কাজ করছেন শান্ত।
শান্ত বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে স্যাররা আমাকে একটি লজিং (গৃহশিক্ষক) ঠিক করে দিয়েছেন। সেই পরিবারের দুই সন্তানকে পড়ানোর বিনিময়ে ওই বাসায় থাকা-খাওয়া আর টিউশনির মাধ্যমে আমার লেখাপড়া চলছিল। করোনায় বাড়ি আসার পর খুব বিপাকে পড়ে যাই। আমাকে টিকে থাকতে হবে, তাই করোনার সময় পার করার জন্য কাজ খুঁজতে থাকি।
কিন্তু এই সময়ে কেউ কোনো কাজে নিতে চাননি। শেষ পর্যন্ত দোকান মালিক আমাকে তাঁর ওষুধের দোকানে কিছু আর্থিক সহায়তার বিনিময়ে কর্মচারী হিসেবে নিয়েছেন। বেতন যা-ই হোক, অন্তত খাওয়াটা তো চলবে। এ জন্য আমি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।’