করোনায় বন্ধ হবে না শিক্ষাখাতের সহযোগিতা : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক |

লকডাউনের এই সময়ে সকল শিক্ষার্থীকে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সবাইকে আমি অনুরোধ করব, সকলে যাতে ঘরে বসে একটু পড়াশোনা করে। তোমরা লেখাপড়া শিখবে এবং মানুষের মতো মানুষ হবে। করোনাভাইরাসের কারণে দেশের অর্থনীতিতে একটি বিরাট ধাক্কা এলেও সরকার শিক্ষাখাতে যেসব সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে সেগুলো বন্ধ হবে না। প্রাইমারি থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত সরকারের দেয়া বৃত্তি এবং উপবৃত্তি সুবিধা অব্যাহত থাকবে।’

রোববার (৩১ মে) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এবারের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশকালে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল নেতৃত্বে বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা গণভবনে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বছরের শুরুতে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক শ্রেণি পর্যন্ত বিনা মূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ এবং নানা শিক্ষা উপকরণ বিতরণ কর্মসূচিও এ সময় অব্যাহত থাকবে। পরীক্ষার ফলাফলে কেউ হয়তো পাস করেছেন আবার কেউ হয়তো পাস করতে পারেননি।’ যারা পাস করতে পারেননি তাদের মন খারাপ না করে আবার লেখাপড়া করে যেসব বিষয়ে অনুত্তীর্ণ হয়েছে, সেসব বিষয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার সুযোগ গ্রহণের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি কৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবক, শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানান।

সকলকে নিজেদের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে এবং সেক্ষেত্রে সকলকে স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি লকডাউনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘সব কিছু দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। কিন্তু একটা দেশ এভাবে চলতে পারে না। আমি দেখতে পাচ্ছি, অন্য দেশগুলোও তাদের অর্থনৈতিক ক্ষেত্র এবং যাতায়াতসহ নানা বিষয় অল্প অল্প করে উন্মুক্ত করছে। কাজেই আমরাও সেই পদ্ধতিতে যাচ্ছি।’

লকডাউনসহ বিভিন্ন সমসাময়িক পদক্ষেপের কারণেই করোনাভাইরাস সংক্রমণ এবং এতে মৃত্যুর হার কিছুটা হলেও বাংলাদেশ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘সকলে যদি স্বাস্থ্যবিধিটা মেনে চলেন তাহলে নিজেকে, পরিবারকে, পাড়া প্রতিবেশীকেও আপনারা সুরক্ষিত রাখতে পারবেন। যাতে এই ভাইরাসটি আর বেশি করে সংক্রমিত করতে না পারে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোভিড-১৯ ভাইরাসটি খালি চোখে দেখা না গেলেও এর এমন একটা শক্তি যে, সারা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে, অর্থনীতির চাকাসহ সব কিছু স্থবির করে দিয়েছে। সেইরকম একটা পরিস্থিতিতে আমাদের চলতে হচ্ছে।’

তিনি চলতি বোরো মৌসুমে কৃষকদের ধানকাটায় সহযোগিতা করায় ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সকলকে ধন্যবাদ জানান।

শিক্ষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘শিক্ষকদেরকে আমি বলব, তাদেরকে সেই শিক্ষাই দেবেন। সেই শিক্ষাটা হচ্ছে শুধু নিজে ভালো থাকা নয়, দেশের কল্যাণে এবং মানুষের কল্যাণে কাজ করা। যা জাতির পিতা আমাদেরকে বার বার শিখিয়েছেন। সেই মানুষের কল্যাণেই যেন আজকের শিক্ষার্থীরা নিবেদিত প্রাণ হয়। দেশকে ভালবাসা, মানুষকে ভালবাসা এবং মানুষের প্রতি কর্তব্য করার শিক্ষাটাই যেন ছেলে-মেয়েরা গ্রহণ করে। আমার যেটা অধিকার অপরের জন্য সেটা কর্তব্য। আবার আমার যেটা কর্তব্য সেটা অপরের জন্য অধিকার-এভাবেই যেন সবাই চিন্তা করে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হয়ে বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে একটি মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করবে, সেটাই আমি চাই। আমি সবসময় এটাই মনে করি, আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা অনেক মেধাবী এবং একটু সুযোগ পেলেই তারা সেই মেধার বিকাশ ঘটাতে পারে। যেকোনো সঙ্কটে আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে। নিজের আত্মবিশ্বাসটা হচ্ছে সব থেকে বড়, যেকোনো পরিস্থিতি আমরা মোকাবিলা করতে পারব। কারণ, আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0057928562164307