করোনার সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ওপর বারবার গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু বিভিন্ন দেশে লকডাউনের শিথিল হওয়ার পর মানা হচ্ছে না সেই নির্দেশ। এতে নতুন করে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। মানুষের মধ্যে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে তাই অভিনব এক পদ্ধতি বের করেছেন রুমানিয়ার এক জুতা কারিগর। তিনি এমন আকৃতির জুতা তৈরি করেছেন যা একজন মানুষ থেকে আরেকজনের মাঝে যথেষ্ট দুরত্ব বজায় রাখতে ভূমিকা রাখবে।
জুতার সেই কারিগরের নাম গ্রিগোর লুপ। ৩৯ বছর ধরে তিনি রুমানিয়ার ট্রানসিলভেনিয়ান শহরে চামড়ার জুতা তৈরি করে আসছেন।
দীর্ঘদিন ধরে লুপ দেশটির থিয়েটার এবং অপেরা হাউসের অর্ডার অনুযায়ী জুতা তৈরি করছেন। কিন্তু করোনার কারণে আরও অনেকের মতোই মন্দা চলছে লুপের ব্যবসাও।
করোনার সংক্রমন কিছুটা কমায় সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে লকডাউনের ওপর বিধিনিষেধ কিছুটা কমেছে। কিন্তু লুপের ভাষায়, লকডাউন শিথিল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি বুঝতে পারছিলেন মানুষজন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টা গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে না। এ কারণেই তিনি দুরুত্ব বজায় রাখার পথ হিসেবে বিশালাকৃতির জুতা তৈরির সিদ্ধান্ত নেন।
লুপ জানান, রাস্তায় বের হয়ে তিনি লোকজনকে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার কোন চেষ্টা করতে দেখেননি। এ ব্যাপারে তিনি একটা ঘটনার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি জানান, কয়েকদিন আগে তিনি বাগানের জন্য চারা কিনতে বাজারে গিয়েছিলাম। সেখানে খুব বেশি লোক ছিল না । তারপরও সবাই গা ঘেষাঘেষি করে দাঁড়াতেই ব্যস্ত ছিল।
তার ভাষায়, তার তৈরি জুতা দুইজন মানুষ পরে মুখোমুখি দাঁড়ালে একজনের থেকে আরেকজনের দুরত্ব থাকবে কমপক্ষে দেড় মিটার।
ইউরোপীয়ান আকৃতিতে লুপের তৈরি জুতা ৭৫ আকৃতির। একেকটি জুতা তৈরি করতে প্রায় এক বর্গমিটার চামড়া লেগেছে।
এর মধ্যে লুপ এই আকৃতির জুতা তৈরির জন্য ৫ টি অর্ডার পেয়েছেন। এগুলো তৈরি করতে তার দুইদিন সময় লেগেছে। প্রত্যেকটি জুতার মূল্য ১১৫ ডলার। সামাজিক মাধ্যমে লুপের তৈরির জুতার প্রশংসা করেছেন অনেকেই।
এ পর্যন্ত রুমানিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ হাজার ৬৬৯ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১হাজার ২৮৮ জনের।