কর্মকর্তাদের অদক্ষতায় ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির বকেয়ার সাথে বাড়তি টাকা

রুম্মান তূর্য |

শিক্ষকদের ৫ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধির বকেয়া এবং নভেম্বর মাসের এমপিওর টাকার সাথে অতিরিক্ত টাকা ব্যাংকে চলে গেছে। প্রবৃদ্ধির বকেয়ার হিসেব কষতে ভুল করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টরা। আর তাদের এই ভুলেই বাড়তি টাকা পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত জুলাই মাস থেকে ৫ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধির বকেয়া এবং নভেম্বর মাসের এমপিওর (বেতন-ভাতার সরকারি অংশ) আটটি চেক নির্ধারিত অনুদান বণ্টনকারী চারটি ব্যাংকের শাখায় গত ৫ ডিসেম্বর পাঠানো হয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র দৈনিক শিক্ষাকে জানায়, এমপিও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অদক্ষতায় এমপিওভুক্ত শত শত শিক্ষক-কর্মচারীর নামে তাদের প্রাপ্যতার অতিরিক্ত টাকা পাঠানো হয়েছে। তিন সপ্তাহ চেষ্টা করেও ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির বকেয়ার হিসেব মেলাতে পারেনি শিক্ষা অধিদপ্তরের ইএমআইএসসেলের স্থায়ী প্রোগ্রামার মো: জামিলুর রহমান ও অস্থায়ীভিত্তিতে চাকরি করা জহির উদ্দিনসহ অন্যরা। এদের ভুল হিসেব অনুযায়ী এমপিওর আটটি চেক চারটি ব্যাংকের শাখায় পাঠানো হয়। এই চেকের সঙ্গে অনেকের প্রাপত্যার অতিরিক্ত টাকা চলে গেছে। এই টাকা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেক অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষক।

প্রাপ্যতার অতিরিক্ত টাকা পাঠানোর ফলে একদিকে সরকারের বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করে পরে ধরা পড়লে সেই টাকা আবার সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে হবে শিক্ষক-কর্মচারীদের। ফেরত না দিলে অবসর ও কল্যাণ সুবিধার টাকা আটকে যেতে পারে। অন্যান্য শাস্তিও হতে পারে।  আবার শিক্ষক-কর্মচারীরা অতিরিক্ত টাকা না তুললে তা প্রত্যন্ত অঞ্চলের ব্যাংকগুলোতে থেকে যাবে।

দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে জানা যায়, চলতি মাসের প্রথম দিকে ইএমআইএস সেলের জামিলুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি হিসেব মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে পৌঁছায়। যেখানে স্কুলের জন্য ৫২৭ কোটি ৮১ লাখ টাকাসহ মোট ৮৩২ কোটি আটাশ লাখ টাকার চাহিদা দেয়া হয়। শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের চলতি দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. গোলাম ফারুক জামিলুরের দেয়া চাহিদার কাগজ সরকারি আদেশের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠান। মন্ত্রণালয় থেকে সরকারি অনুমোদন পাওয়ার পর ৫ ডিসেম্বর শিক্ষকদের এমপিওর চেক ব্যাংকে পাঠানো হয়। ১১ ডিসেম্বর ছিলো টাকা তোলার শেষদিন। ১২ ডিসেম্বর থেকে সারাদেশ থেকে দৈনিক শিক্ষার ভক্ত অসংখ্য শিক্ষক প্রাপ্যতার অতিরিক্ত টাকা তাদের নামে চলে যাওয়ার তথ্য দেন। তাদের অনেকেই অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করতে রাজি হননি বলে জানান।    

দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে জানা যায়, বরিশালের একজন প্রভাষক পদোন্নতি পেয়ে সহকারী অধ্যাপক হয়েছেন গত নভেম্বর মাসে। এরফলে তার জন্য ইএমআইএস সেল থেকে নভেম্বরের বেতন পাঠানো হয়েছে ৬ষ্ঠ গ্রেডে। কিন্তু তিনি চলতি বছরের ৩০ জুন প্রভাষক হিসেবে ৯ কোডে বেতন পেতেন। অক্টোবর মাসেও তিনি ৯ কোডে বেতন পেয়েছেন। সেই হিসেবে তার ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির বকেয়া হিসেব প্রভাষকের ৯ কোডে হওয়ার কথা। কিন্তু তার জন্য ৬ষ্ঠ কোডে হিসেব কষে টাকা পাঠিয়েছে শিক্ষা অধিদপ্তর।

এছাড়াও ইনডেক্স সংশোধন হয়েছে সেপ্টেম্বর মাসে কিন্তু পুরাতন ইনডেক্স ধরে বকেয়া দেয়া হয়েছে কয়েকজনের।  

ভুল হিসেবের বিষয়ে জানতে  ইএমআইএস সেলের প্রধান জামিলুরের বক্তব্য জানার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অধিদপ্তরর একজন পরিচালক বলেছেন, প্রতিষ্ঠান প্রধানরা যেন বাড়তি টাকা না তোলেন। খুব শিগগিরই অধিদপ্তর থেকে নোটিস দেয়া হবে। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য - dainik shiksha হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক - dainik shiksha সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার - dainik shiksha রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0054800510406494