কর্মস্থল না ছাড়ায় শিক্ষা অফিসের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে ফুলবাড়ীয়ায়

ফুলবাড়ীয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি |

বদলির আদেশকে কেন্দ্র করে ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষকরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে তাদের জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে যেতে হচ্ছে।

জানা গেছে, গত ২৪শে ডিসেম্বর ফুলবাড়ীয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসরিন আক্তারের বদলির আদেশ হয়েছে টাংগাইল সদর উপজেলায়। টাংগাইল সদর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহিন আশরাফীর বদলির আদেশ হয় ফুলবাড়ীয়ায়। এক মাস ২১ দিন যাবৎ বদলির আদেশ হলেও এ দুই শিক্ষা কর্মকর্তা তাদের কর্মস্থল ছাড়তে গড়িমসি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে দৌড়াচ্ছেন বদলির আদেশ বাতিল করানোর জন্য।

জানা গেছে, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে ৭টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র ৪ জন। ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের ২৫শে এপ্রিল সহকারি মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম সারওয়ার ও ২০১৪ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে হিসাবরক্ষক মোঃ আমিনুর রহমান অনত্র বদলি হয়ে যাওয়ার পর থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের পদ দুটি শূন্য রয়েছে। ২০১৪ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি উপজেলায় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন নাসরিন আক্তার। দীর্ঘ প্রায় চার বছর পর তার এ বদলির আদেশ হয়। গত বছরের ২৪শে ডিসেম্বর বদলির আদেশের পর চলতি বছরের ৯ই জানুয়ারি থেকে ১৫ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিনি অর্জিত ছুটিতে যান। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার না থাকায় জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মৌখিক নির্দেশে অফিসের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মোহসিনা বেগম।

জানা গেছে, উপজেলায় এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৩৭টি, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩১টি, ননএমপিও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৭ টি, এমপিওভুক্ত দাখিল মাদ্রাসা ৪৩টি, আলিম মাদ্রাসা ১টি, ফাজিল মাদ্রাসা ৭টি, ননএমপিও দাখিল মাদ্রাসা ১টি ও ৩টি ডিগ্রী কলেজসহ ১৪ টি কলেজ রয়েছে।

মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসে উপজেলার ৪টি কলেজের ১০ জন শিক্ষক, ৬টি স্কুলের আইসিটি শিক্ষক ৬জন ও ১১জন শ্রেণি শিক্ষকের এমপিও (বেতন ভাতার সরকারি অংশ) শর্ত পূরণ করে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে ইন্টারনেটে আবেদন করতে বলা হয়। উপজেলা শিক্ষা অফিসার না থাকায় ও ইন্টারনেট পাসওয়ার্ড না পাওয়ায় বেশির ভাগ শিক্ষকরা এমপিও আবেদন প্রেরণ করতে পারেন নি।

ময়মনসিংহ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে ৮ থেকে ১০ জন শিক্ষক এমপিও আবেদন করেছেন বলে জানা গেছে। নাম না প্রকাশ করার শর্তে উপজেলা সদরের মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষক বলেন, প্রায় ৫ বছর যাবত সহকারি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নেই। বর্তমানে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার না থাকায় চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন শিক্ষকরা। বিদ্যালয়ে গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম ও এমপিও আবেদন করতে জেলা শিক্ষা অফিসে দৌড়াতে হয়েছে শিক্ষকদের। বেশির ভাগ শিক্ষক চলতি মাসের নির্ধারিত সময়ে এমপিও আবেদন করতে পারেনি।

একাডেমিক সুপারভাইজার মোহসিনা বেগম বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার না থাকায় প্রশাসনিক কাজে কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে। জেলা শিক্ষা অফিসারের মৌখিক নির্দেশে অফিসের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নারসরিন আক্তার মুঠোফোনে বলেন, টাংগাইল সদর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে আমার স্থলে বদলি করা হয়েছে। তিনি যোগদান করতে আসছেন না। শিক্ষক ভোগান্তির বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন আমিতো অর্জিত ছুটিতে রয়েছি।

ময়মনসিংহ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, ফুলবাড়ীয়ায় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার না থাকায় আমার উপর কাজের চাপ বেড়েছে। বদলির আদেশ হওয়ার পরও তাদের কর্মস্থলে যোগদান না করার বিষয়টি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরেরস একজন পরিচালককে টাংগাইল জেলা শিক্ষা অফিসার ও আমি সরাসরি বলেছি এবং লিখিতভাবে জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুতই এর সমাধান হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি - dainik shiksha মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! - dainik shiksha খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ - dainik shiksha এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা - dainik shiksha মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! - dainik shiksha মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024161338806152