পটুয়াখালীর কলাপাড়ার আলোচিত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনি লাল সিকদারকে অবশেষে বদলি করা হয়েছে। তার এ বদলির খবরে খুশি উপজেলা অধিকাংশ শিক্ষক। দৈনিকশিক্ষা ডটকমে গত ২৯ এপ্রিল “৭ শিক্ষার্থীর ৩ শিক্ষক ! ” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয় । সংবাদের প্রকাশের পর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে মনি লাল সিকদারের বদলির আদেশ জারি করা হয়।
বদলি বানিজ্য, শিক্ষা কমিটির নির্দেশ উপেক্ষা, বিভিন্ন প্রকল্পের কমিশন বাণিজ্য, অর্থের বিনিময়ে শ্রান্তি বিনোদনের ছুটি প্রদান,ভুলে ভরা প্রশ্ন পত্রে পরীক্ষা গ্রহণসহ বিভিন্ন কারণে কলাপাড়ায় যোগদানের পরই আলোচিত হন প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনি লাল সিকদার। গত ৩ মে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশাসন) মো. বাহারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর উপজেলায় বদলি করা হয়।
দৈনিকশিক্ষা ডটকমের অনুসন্ধানে দেখা গেছে. মনি লাল সিকদার কলাপাড়ায় যোগদানের পরই দালাল শ্রেণির একদল শিক্ষকের সহায়তায় তিনি গোটা উপজেলার শিক্ষা কার্যক্রমকে বাণিজ্যখানায় রূপ দেন। বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট থাকলেও স্কুল কমিটি তাকে আর্থিক সহায়তা না করায় সেই স্কুলে শিক্ষককে বদলি, সংযুক্তি দেন নি। আবার স্কুলে শিক্ষার্থী না থাকলেও সেই স্কুলে রয়েছে একাধিক শিক্ষক।
কলাপাড়ার রসুলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে এক শিক্ষক দিয়ে। বানী কান্ত হাওলাদার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৭ শিক্ষার্থীর জন্য তিন শিক্ষক। বৌলতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বছরের পর বছর ধরে একজন শিক্ষক দিয়ে চলছে পাঠদান চললেও শিক্ষার মান বৃদ্ধিতে তিনি কোন ভূমিকা না রাখায় নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। সর্বশেষ শিক্ষক বদলিতে প্রাথমিক ও গনশিক্ষা মন্ত্রী ও শিক্ষা কমিটির নির্দেশ অমান্য করে আর্থিক সুবিধা নিয়ে শিক্ষক বদলি করেন। এমনকি শিক্ষা কমিটির ৬ সদস্য তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেন। প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনি লাল সিকদারের এহেন কর্মকাণ্ড নিয়ে দৈনিক শিক্ষা ডটকমে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হলে টনক নড়ে।
একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করেন, শিক্ষা কর্মকর্তার অপর এক অনিয়ম ও দুর্নীতির সহযোগী এক সিনিয়র সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিও)। সিনিয়র এই এটিওকে প্রতিটি বিদ্যালয় ভিজিট ও বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা থেকে তাকে দিতে হয় নির্দিষ্ট অংক। টাকার ভাগ না দিলে তিনি ভিজিট রিপোর্টে শিক্ষার পরিবেশ ভালো না, শিক্ষকরা নিয়মিত আসেন না, ক্লাস করেন না এরকম মন্তব্য রেখেন। তাকেও বদলি করা হলে কলাপাড়ার শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসবে বলে শিক্ষকসহ সর্বস্তরের মানুষের অভিমত।