ভাঙ্গায় কলেজছাত্র চন্দন সরকারের বিরুদ্ধে মাদক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। শনিবার বিকালে ভাঙ্গা উপজেলার পৌর সদরের কলেজ রোডে ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে হাতে হাত রেখে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, শিক্ষক সমাজ, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ শত শত নারী-পুরুষ অংশ নেয়। এ সময় বক্তারা অবিলম্বে মেধাবী কলেজছাত্র চন্দন সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মাদক মামলা প্রত্যাহারের দাবি করেন।
চন্দন চন্দ্র সরকার সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুধীন সরকার মঙ্গলের ভাতিজা ও ঢাকা কলেজের ছাত্র। সুধীন সরকার মঙ্গল বক্তব্যে বলেন, গত ৩ অক্টোবর বিকালে চন্দন তার নিজ গ্রামের বাড়ি ভাঙ্গা পৌরসভার চন্ডীদাসদি থেকে বের হয়ে আলগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাওছার ভুইয়ার বাড়ির সামনে আসে। সে সময় একটি সাদা মাইক্রোবাসে বসে থাকা মাদারীপুর ডিবি পুলিশ চন্দন সরকারকে মারপিট করে তুলে নিয়ে যায় যা ভাঙ্গায় বেশ কয়েকটি সিসি টিভির ফুটেজ রয়েছে। ঐদিন সন্ধ্যায় ডিবি দারোগা আবু সাঈদ আমার ভাতিজার ফোন দিয়ে ফোন করে আমার কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। আমরা টাকা না দিয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশের সহায়তা চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে দারোগা আবু সাঈদ আমার ভাতিজা চন্দন সরকারকে ২০০ পিস ইয়াবাসহ রাজৈর হতে গ্রেফতার দেখিয়ে রাজৈর থানায় সে নিজে বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। দারোগা আবু সাঈদের বাড়ি ভাঙ্গা থানায় হওয়াতে তিনি নিয়মিত ভাঙ্গায় অপরাধ জগতের লোকদের সঙ্গে উঠাবসা করে অসহায় মানুষকে হয়রানি করে থাকেন।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে বক্তারা দাবি তুলে বলেন, কিছু অসাধু পুলিশ টাকার জন্য মেধাবী কলেজছাত্রের জীবন যাতে নষ্ট করে দিতে না পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে উপযুক্ত বিচার আশা করেন।
চন্দন সরকারের বড় ভাই সুব্রত সরকার বলেন, আমার ছোট ভাই অত্যন্ত মেধাবী সে করোনাকালীন কলেজ বন্ধ থাকায় নিয়মিত পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত থাকত। তাকে ভাঙ্গা থেকে তুলে নিয়ে মাদারীপুরে মিথ্যে মামলা দেওয়ায় ডিবি পুলিশের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। সরকারপ্রধানের কাছে তিনি দাবি করেন, শুধু টাকার জন্য এভাবে যেন কাউকে মিথ্যে হয়রানি না করে পুলিশ।
এদিকে ডিবি পুলিশ যে আচরণ করেছে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শত শত নারী-পুরুষ।
বিষয়টি নিয়ে চন্দন সরকারের পরিবার ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরীর শরণাপন্ন হলে তিনি পরিবারটিকে সান্ত্বনা দিয়ে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটনসহ দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুর রহমান বলেন, চন্দন সরকারকে অপহরণ ও মাদক মামলার বিষয়ে তার পরিবারের কাছ থেকে একটি অভিযোগ থানায় এসেছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সুধীন সরকার মঙ্গলের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মিঠুন চক্রবর্তী, সরকারি কে এম কলেজের সাবেক ভিপি শওকত হোসেন, অ্যাডভোকেট আবুল হাচান, পৌর কাউন্সিলর আবু তালেব, নারী নেত্রী সম্পা আক্তার, শিল্পী চক্রবর্তী প্রমুখ।