জীবনে কখনো কসম খাননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। স্বস্তির নিঃশ্বাস কিংবা হতাশা, যাই প্রকাশ করতে চাই না কেন, এসব ক্ষেত্রে কসম খাওয়ার শব্দগুলো ভাষার অন্যতম অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
ইউক্রেনের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রী উলানা সুপ্রুন বলেছেন, কসম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে। কারণ এ ধরনের শব্দের ব্যবহার দুটি মানুষের মধ্যে দৃঢ় সু-সম্পর্ক এবং "ভালো মানসিক যোগাযোগ" নিশ্চিত করে।
জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের গণমাধ্যমে প্রকাশ্যে কসম খাওয়া বন্ধে এমপি ওলহা বোহোমোলেটসের আনা প্রস্তাবিত নতুন আইনের প্রতিক্রিয়ায় এমন মন্তব্য করেন তিনি।
প্রস্তাবিত ওই আইনে বলা হয়, টেলিভিশন এবং ভাষণে কেউ কসম খেলে তার বিরুদ্ধে ১২শ ৭৫ ইউক্রেনীয় রিভনিয়াস বা ৩৯ পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
কিন্তু ডা. সুপ্রুনের মতে, বিশেষ পরিস্থিতিতে ভর্ৎসনা করা যেতে পারে। কারণ, "বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কসম খাওয়ায় ব্যবহৃত শব্দগুলো দিয়ে বোঝায় যে, ওই মানুষগুলো একে অন্যের ঘনিষ্ঠ এবং তাদের মধ্যে ভালো মানসিক যোগাযোগ রয়েছে।"
তিনি আরো বলেন, মানুষের বিশ্রী ভাষা ব্যবহারের চেয়ে বরং আগ্রাসী মনোভাব দূর করতে কাজ করা উচিত।
এ বিষয়ে তার দেয়া ফেসবুক পোস্টে ২১ হাজারেরও বেশি মানুষ রিঅ্যাক্ট করেছে। এই পোস্টের সবচেয়ে জনপ্রিয় কমেন্ট ২৭শ বার লাইক দেয়া হয়েছে। যাতে বলা হয়েছে, ডা সুপ্রুনের পোস্ট দেখে হয়তো ভর্ৎসনা করেছেন মিস বোহোমোলেটস।
"কসম খাওয়ার কক্ষ"
যদিও নতুন আইনটিতে জনপ্রিয় ব্যক্তিদের সম্পর্কেই বলা হয়েছে তবুও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই, এটি কীভাবে তাদের জীবন পাল্টে দিতে পারে তা নিয়ে মজা করেছেন।
ইয়েবহেন হালাহান বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, কসম খাওয়া বিরোধী আইন পাস হলে বাসিন্দারা "ইউক্রেনের নিত্য দিনের জীবনযাত্রা" নিয়ে কীভাবে কথা বলবে।
অনেকেই আবার এমন এক কল্পিত বিশ্বের কথা তুলে এনেছেন যেখানে মানুষ বিশেষ কিছু জায়গায় কসম খেতে পারবে।
সাংবাদিক ইয়েভহেন মুডঝাইরি বলেন, অফিসে "কসম কক্ষ" স্থাপন করা যেতে পারে। রেস্টুরেন্টে থাকা ধূমপায়ী ও অধূমপায়ীদের জন্য আলাদা জায়গার মতোই কসম খাওয়ার জন্যও আলাদা জায়গা করা যেতে পারে।
তিনি কৌতুক করে বলেন, কসম বিরোধী সার্টিফিকেট না থাকলে বাচ্চাদের স্কুলে ভর্তি করা হবে না। আর ইউক্রেনে শুধু সেই গাড়িগুলোই আমদানি করা হবে যেগুলোতে কসম বিরোধী বোতাম থাকবে।
তবে অনেকেই আবার স্বভাবসিদ্ধ ভাবেই নতুন এই আইনকে বাজে ভাষায় গালাগাল করেছেন। বর্তমানে ইউক্রেনের পার্লামেন্টারি কমিটির বিবেচনাধীন রয়েছে এই আইনটি।