দীর্ঘকাল পর আসন্ন কাউন্সিল ঘিরে ছাত্রদলে এখন সরগরম অবস্থা। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন দুই শীর্ষ নেতা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। সবশেষ ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে ছাত্রদলের কাউন্সিল হয়। তারপর গত ২৭ বছর কমিটি হয়েছে হাইকমান্ডের সরাসরি বাছাইয়ে।
সারাদেশের বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের ১১৭টি সাংগঠনিক ইউনিট থেকে পাঁচজন করে মোট ৫৮৫ জন ভোটার পছন্দের নেতাকে ভোট দেবেন। এই কাউন্সিল উপলক্ষে ভোট প্রার্থনায় প্রাথীরা রীতিমত উদয়াস্ত এক করে ফেলছেন। প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে থাকার চেষ্টা করছেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। নেতারা ফোন, এসএমএস বা প্রতিনিধি পাঠিয়ে ভোট দেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছেন।
এদিকে দলের সাবেক প্রভাবশালী সিনিয়র নেতারা অঘোষিত কয়েকটি প্যানেল তৈরি করেছেন। এই প্যানেলের পক্ষে তারা ভোট চাচ্ছেন। কোন প্রার্থী কোন ’বড় ভাই’ এর লোক তা নিয়ে দলে চলছে নানা বিশ্লেষণ। এই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাবেক ছাত্রদল নেতাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি করে দিয়েছেন। ইতোমধ্যে মনোনয়নপত্র বাছাই সম্পন্ন করে বৈধ প্রার্থীদের খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে বাছাই কমিটি।
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দিতার জন্য আবেদন করা ৭৬ জন প্রার্থীর মধ্যে যাচাই-বাছাই করে ৩১ জনকে বাদ দেয়া হয়েছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে বৈধ প্রার্থী হয়েছেন ৪৫ জন। এর মধ্যে সভাপতি পদে বৈধ প্রার্থী ১৫ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৩০ জন। বাতিল হয়েছে সভাপতি পদে ১২ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ১৯ জনের মনোনয়ন।
শিডিউল অনুযায়ী গত বুধবার প্রার্থীদের আপত্তি গ্রহণ এবং ২৯ এবং ৩০ আগস্ট প্রার্থীদের আপিল নিষ্পত্তি করা হবে। প্রার্থীতা প্রত্যাহার করা যাবে ৩১ আগস্ট। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে ২ সেপ্টেম্বর। প্রচার চালানো যাবে ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত। ভোট গ্রহণ করা হবে ১ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত।
নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সাবেক ছাত্রদল নেতা খায়রুল কবির খোকনের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি, ফজলুল হক মিলনের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের বাছাই কমিটি ও শামসুজ্জামান দুদুর নেতৃত্বে ৩ সদস্যের আপিল কমিটি গঠন করা হয়। বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, বিএনপির ভ্যানগার্ড জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন গতি পাবে। নেতৃত্বে আসবে পরিবর্তন।
সভাপতি পদে বৈধ যারা: হাফিজুর রহমান, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবন, মো: মামুন খান, ফজলুর রহমান খোকন, মো: আব্দুল মাজেদ, মাহমুদুল হাসান বাপ্পি, আশরাফুল আলম ফকির, রিয়াদ মো: তানভীর রেজা রুবেল, মো: এরশাদ খান, মো: সুরুজ, মো: শামীম হোসেন, সুলাইমান হোসেন, মো: ইলিয়াস, এসএম সাজিদ হাসান বাবু ও এবিএম মাহমুদ আলম সরদার।
সাধারণ সম্পাদক পদে বৈধ যারা: মো: আমিনুর রহমান আমিন, মো: জুয়েল হাওলাদার, মো: তানজিল হাসান, শাহ নাওয়াজ, মো: জাকিরুল ইসলাম জাকির, মো: কারিমুল হাই (নাঈম), মাজেদুল ইসলাম, মো: আলাউদ্দিন খান, ডালিয়া রহমান, মো: মিজানুর রহমান সজিব, নাজমুল হক হাবিব, ওমর ফারুক শাকিল চৌধুরী, শেখ আবু তাহের, মো: মহিনউদ্দিন রাজু, মুন্সি আনিসুর রহমান, মো: ইকবাল হোসেন শ্যামল, মো: জুয়েল হাওলাদার, মো: মিজানুর রহমান শরিফ, মো: রাশেদ ইকবাল খান, মো: আরিফুল হক, রিয়াদ মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন, মো: আজিজুল হক সোহেল, শেখ মো: মশিউর রহমান রনি, আব্দুল মোমেন মিয়া, রাকিবুল ইসলাম রাকিব, মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ আবুল বাশার, মো: আসাদুজ্জামান রিংকু, সোহেল রানা, কাজী মাজহারুল ইসলাম ও এএএম ইয়াহ ইয়া।
সাধারণ সম্পাদক পদে তিনজন নারী প্রার্থী ফরম কেনেন। তাদের মধ্যে দুজন বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের নাদিয়া পাঠান পাপন ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডালিয়া রহমান মনোনয়নপত্র জমা দেন।