ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় চিংড়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে হাঁস, মুরগী ও গবাদী পশুর খামার গড়ে তোলায় দুর্গন্ধে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাশাপাশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনেই চিংড়াখালী সিনিয়র মাদরাসা এবং চিংড়াখালী নূরাণী মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষার্থীদেরও দুর্গন্ধের মধ্যে লেখাপড়া করতে হচ্ছে। এব্যাপারে
খামার মালিক আবদুল জলিল মিঞাজীর বিরুদ্ধে সম্প্রতি পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে অভিভাবকরা।
জানা গেছে, আবদুল জলিল মিঞাজীর বাবা আবদুল হক মিঞাজীর দেয়া ৯০ শতক জমিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৪৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ২০০১ ও ২০১০ সালে বিদ্যালয়ে দুটি ভবন নির্মাণ হয়। আবদুল জলিল মিঞাজী ২০১৭ সালে বিদ্যালয়ের পুরোনো পরিত্যাক্ত ভবনে একটি খামার গড়ে তোলেন। পরে বিদ্যালয়ের সামনের মাঠ ও নিজস্ব প্রায় ১ একর জমিতে খামারটি সম্প্রসারণ করেন। এখানে হাঁস-মুরগীসহ গরু ছাগল পালন করা হচ্ছে।
অভিভাবকদের অভিযোগের ভিত্তিতে পরিবেশ মহাপরিচালক তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে বরিশাল বিভাগীয় পরিচালককে চিঠি দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
অভিযোগকারী অভিভাবক মো. হাসান মাহমুদ বলেন, খামারের দুর্গন্ধে শিক্ষার্থীরা ঠিকমত ক্লাশ করতে পারেনা। এর প্রতিকার চেয়ে আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরে অভিযোগ করেছি।
চিংড়াখালী সিনিয়র মাদ্রসার অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিন এবং চিংড়াখালী নূরাণী মাদরাসা ও এতিমখানার পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার স্বার্থে খামারটি অন্যত্র সরিয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি। চিংড়াখালী সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক বেল্লাল মোল্লা বলেন, বিদ্যালয়ের সামনে খামার করায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় সমস্যা হচ্ছে। বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির (এসএমসি) সভাপতি বাদল সিকদার বলেন, খামারটি সরিয়ে নিতে এর মলিককে অনুরোধ করলেও তিনি তাতে কর্ণপাত করেন না।
এব্যাপারে খামার মালিক জলিল মিঞাজী বলেন, পৈতৃক সম্পত্তিতে আমি খামার করেছি। অন্য কারো জমি দখল করিনি বলে দাবি করেন তিনি।
এব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম দৈনিকশিক্ষাকে জানান, যেভাবে খামারটি স্থাপন করা হয়েছে এটা কোন ভাবেই কাম্য নয়। খামারটি সড়িয়ে নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঝালকাঠি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, জেলা প্রশাসকের অনুমতি ছাড়া এ ধরনের খামার করা বেআইনী। যে কোনো খামার নির্মাণের পূর্বে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে করতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আকন্দ মোহাম্মদ ফয়সাল উদ্দিন খামার পরিদর্শন শেষে জানান, চিংড়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে খামারটি দেখে আমি বিস্মিত। এটা কোন ভাবেই কাম্য নয়। খামার মালিককে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ও জমির মালিকানার প্রমাণ দেখাতে বলা হয়েছে। পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।