কাম্য যোগ্যতা না থাকায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফারজানা ইয়াসমিনের এমপিও স্থগিত করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। বাংলা বিষয়ে প্রভাষক পদে নিয়োগের সময় তাঁর কাম্য যোগ্যতা না থাকায় তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, এমপিও প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ফারজানা ইয়াসমিনের করা রিট হাইকোর্ট খারিজ করে দেয়ায় জানুয়ারি মাসের এমপিও স্থগিত করা হয়।
অধিদপ্তর সূত্র দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানায়, কাম্য যোগ্যতা না থাকায় সাবেক আগারগাঁও তালতলা সরকারি কলোনী উচ্চ বিদ্যালয় ও মহিলা কলেজে প্রভাষক পদে নিয়োগ পাওয়া এবং বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফারজানা ইয়াসমিনের এমপিও ২০০৬ খ্রিস্টাব্দের ১৯ জুলাই প্রত্যাহার করা হয়। একই সাথে তাঁর নিয়োগ বাতিলের জন্য ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতিকে চিঠি দেয়া হয়। ফারজানা ইয়াসমিন বেতন ভাতা স্থগিতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন। ওই সময় আদালত এমপিও ছাড়ের জন্য অর্ন্তবর্তীকালীন আদেশ এবং তিন সপ্তাহের রুল জারি করে। আদালতের অর্ন্তবর্তীকালীন আদেশের পর তিনি হাইকোর্টের রিট প্রত্যাহার করে নেন। আদালত ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের ২৬ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে রিট না চালালোর কারনে রুল খারিজ করেন। গত ১ জানুয়ারি শিক্ষা অধিদপ্তরের আদেশে ফারজানা ইয়াসমিনের এমপিও স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে জানুয়ারি থেকে তাঁর এমপিও স্থগিত করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এমপিও স্থগিত হওয়া বাংলা বিষয়ের প্রভাষক ফারজানা ইয়াসমিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিতে দুই সিনিয়রকে ডিঙ্গিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ২০০৪ খ্রিস্টাব্দের ১ মে এমপিওভুক্ত হন। কিন্তু পদোন্নতি পাননি। অপরদিকে রসায়ন বিষয়ের শিক্ষক মাহবুব ফেরদৌস ২০০১ খ্রিস্টাব্দের ১ এপ্রিল এমপিওভুক্ত হয়েছেন। ২০১০ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন তিনি।
এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির পৌরনীতি বিষয়ের অপর এক শিক্ষক সালমা বানু ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফরজানা ইয়াসমিন একই দিনে অর্থাৎ ২০০৪ খ্রিস্টাব্দের ১ মে এমপিওভুক্ত হন। কিন্তু সালমা বানু ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসে পদোন্নতি পেয়ে সহকারী অধ্যাপক হয়েছেন। এ দুই সিনিয়র শিক্ষক কর্মরত থাকা সত্ত্বেও প্রভাষক ফারজানা ইয়াসমিন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব পালন করছেন বলে অভিযোগ করা হয় মিরপুর থানা শিক্ষা অফিসে। অভিযোগে আরও বলা হয়, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফারজানা ইয়াসমিন সরাসরি অধ্যক্ষ লিখছেন। এছাড়া স্বেচ্ছাচারিভাবে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
২০১২ খ্রিস্টাব্দের ৯ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে তাঁর দায়িত্ব উপাধ্যক্ষ পালন করবেন। উপাধ্যক্ষ না থাকলে পরবর্তী জ্যেষ্ঠ শিক্ষক অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করবেন। জনবল কাঠামো অনুযায়ী শিক্ষক-কর্মচারীদের পারস্পরিক জ্যেষ্ঠতা তাদের প্রথম এমপিওভুক্তির তারিখ থেকে নির্ধারণ করা হবে। এ পরিপত্রটি লঙ্ঘন করেছেন ফারাজানা ইয়াসমিন।