চাকরি সরকারিকরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি চেয়েছেন কারিগরি শিক্ষার সম্প্রসারণে স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্টের (স্টেপ) ৮৭৬ শিক্ষক। শুক্রবার (২৯ মার্চ) কারিগরি শিক্ষার অগ্রযাত্রায় স্টেপ প্রকল্পে নিয়োজিত শিক্ষকদের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভায় এই দাবি করেন বাংলাদেশ পলিটেকনিক টিচার্স ফেডারেশন (বিপিটিএফ)।
সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, মনোটেকনিক, গ্রাফিকস্; আর্টস, বাংলাদেশ সার্ভে ইনস্টিটিউট ও ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলোজিতে শিক্ষক সংকট প্রকট। আর এ কারণেই কারিগরি শিক্ষার সম্প্রসারণে স্টেপের আওতায় থাকা শিক্ষকদের চাকরি রাজস্বখাতে আত্তীকরণের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইডিইবি) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি একেএমএ হামিদ বলেন, আমাদের লাখ লাখ দক্ষ কর্মীর অভাব। সেখানে আপনারা মাত্র ৮৭৬ দক্ষ কর্মী যাদের কর্মক্ষেত্র থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে। আসলে আপনাদেরকে প্রয়োজন আমাদের। কারিগরি শিক্ষকদের এক প্ল্যাটফর্মে আসতে হবে। এখানে কোনো বিভেদ হবে না।
আইডিইবির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুর রহমান বলেন, ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে আইডিইবি শিক্ষক স্বল্পতা নিয়ে আন্দোলন করে। আর সে সময় সরকার স্টেপ প্রকল্পের আওতায় ১০১৫ জনকে নিয়োগ করে। সে সময় এ শিক্ষক নিয়োগ না দিলে কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা চালু রাখা সম্ভব ছিল না। রাজস্ব খাত থেকে বর্তমানে ৬৫০ জনের মতো কারিগরি শিক্ষক রয়েছে। আর সে কারণেই এখনো এই প্রায় ৮৭৬ শিক্ষক না থাকলে আবারো ধসে পড়বে কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা। আর সে কারণেই আমরা সরকারকে ২২০০ পদ তৈরির আহ্বান জানাই যা হয়তো আগামী ৩ মাসের মধ্যে হবে। যেখানে অগ্রাধিকার পাবে স্টেপের শিক্ষকরা।
এ সময় উপস্থিত স্টেপ প্রকল্পের আওতায় থাকা শিক্ষকরা বলেন, দুই বছরের প্রকল্পের মেয়াদ দুই ধাপে বৃদ্ধি করে ৭ বছরে উন্নীত করা হয়। কিন্তু আগামী ৩ মাস পর হঠাৎ করেই প্রকল্পটি বন্ধ করে দেয়া হবে। আমাদের ৮৭৬ শিক্ষক ও তাদের পরিবারের ভবিষ্যতের কী হবে, আমাদের কর্মসংস্থানের কী হবে? আমাদের অধিকাংশদের বয়স এখন ৩০ বছরের বেশি। আমরা কী করব? তাই দাবি জানাচ্ছি আমাদেরকে রাজস্বখাতে আত্তীকরণ করা হোক।
বাপশিস কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি হাফিজ আহম্মেদ সিদ্দিকি বলেন, আপনাদের প্রতি বাপশিসের অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে। আপনাদেরও রাজস্বখাতে আত্তীকরণ হবে এ বিষয়ে আমরা আশাবাদী।
বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী খবির হোসেন বলেন, যে মার্চে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছে, যে মাস উদযাপনের, সেই মাসে আহাজারি করছে প্রায় ৯০০ শিক্ষক। জুন মাস থেকে যদি স্টেপের শিক্ষকরা না থাকে তাহলে ৪৯ কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিটিতে ১৭/১৮ জন শিক্ষক থাকবে না। এভাবে কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। প্রধানমন্ত্রী যদি ১০-১২ লাখ রোহিঙ্গাকে খাওয়াতে পারেন, তাহলে এই ৮৭৬ শিক্ষকের জন্যও ব্যবস্থা করবেন তিনি।
বিপিটিএফ কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী দেশ গঠনে কাজ করে যাচ্ছেন যেখানে বড় অবদান রাখছে কারিগরি শিক্ষা।