জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড নতুন কারিকুলাম, সিলেবাস ও পুস্তক প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে। বর্তমানের ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত কৃষিশিক্ষা বিষয়ের কারিকুলাম, সিলেবাস ও বইতে প্রচুর ত্রুটি রয়েছে। কনটেন্ট অনেক জটিল, কঠিন, এলোমেলো, ভুল, অপ্রয়োজনীয় শিখন ফল থাকায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য বোধগম্য নয়। নতুন কারিকুলাম, সিলেবাস ও পুস্তকের শিখন ফল শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য সহজ, সরল, ত্রুটিমুক্ত ও বোধগম্য হওয়া প্রয়োজন। শনিবার (১৯ অক্টোবর) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।
নিবন্ধে আরও বলা হয়, তাই কৃষিশিক্ষা বিষয়ে ত্রুটিগুলো এবং এর সমাধান উল্লেখ করা হলো—
ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত কারিকুলামে বিষয়বস্তুর ধারাবাহিকতা ঠিক নয়। একই বিষয়বস্তু একাধিক শ্রেণিতে দেওয়া হয়েছে। আবার খুব প্রয়োজনীয় ও আধুনিক কৃষির বিষয় কোনো শ্রেণিতেই দেওয়া হয়নি। একই অধ্যায়ে বিভিন্ন বিষয়বস্তু থাকায় সিলেবাস এলোমেলো হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীরা বোঝেও না, মনেও রাখতে পারে না। যেমন ফসল, মাছ, পোল্ট্রি, গবাদিপশু, বৃক্ষ একসঙ্গে দেওয়াা হয়েছে। কিছু কিছু বিষয় অনেক জটিল, যা অর্নাস বা মাস্টার্সের সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত। কৃষিশিক্ষা বায়োলজিক্যাল বিজ্ঞান হওয়ায় প্রতিনিয়ত পরিবর্তন ও উন্নত হচ্ছে। কিন্তু পুস্তকগুলোতে সনাতন প্রযুক্তিরই উল্লেখ রয়েছে। তারপর অনুশীলনের প্রশ্ন সৃজনশীল পদ্ধতিতে হয়নি। কিছু কিছু বিষয় সরকার বাতিল করেছে। অথচ সিলেবাসে দেওয়া হয়েছে। যেমন একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ‘এসআরআই’ পদ্ধতি। সর্বোপরি, সিলেবাস দেশের উন্নয়নমুখী ও সরকারের ভিশন বাস্তবায়নমুখী হয়নি।
এখন যা করা প্রয়োজন—কারিকুলামের ধারাবাহিকতা বা ক্রম ঠিক রাখতে হবে। সহজ বিষয় থেকে কঠিন বিষয়ের দিকে ক্রম রাখা। একই বিষয়বস্তু একাধিক শ্রেণিতে না দেওয়া। অপ্রয়োজনীয় বিষয়বস্তু না দিয়ে প্রয়োজনীয়, বাস্তবধর্মী, আধুনিক, সহজ, সরল বিষয়বস্তু সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা। প্রতিটি অধ্যায়ের বিষয়বস্তু ভিন্ন রাখলে শিক্ষার্থীদের বুঝতে ও মনে রাখতে সহজ হবে। অনুশীলনীর প্রশ্ন সৃজনশীল পদ্ধতিতে হবে। সর্বোপরি, সিলেবাস দেশের উন্নয়নমুখী ও সরকারের ভিশন ও নীতিমালা বাস্তবায়নমুখী হতে হবে।
প্রতি বছর প্রচুর শিক্ষার্থী লেখাপড়া বাদ দেয় অর্থাত্ ঝরে পড়ে। এদের কর্মসংস্থান বা বেকারত্ব ও দারিদ্র্য দূর করার কথা ভেবে সিলেবাসে প্রায়োগিক বিষয় বেশি উল্লেখ করতে হবে। যাতে এই পুস্তক পড়ে নিজেরাই কৃষিতে মনোনিবেশ করে বেকারত্ব দূর করতে পারে।
ফরহাদ আহাম্মেদ : টাঙ্গাইল।