কোটা সংস্কার:পরিসমাপ্তি হোক সুন্দর

রুমান হাফিজ |

এবছর এপ্রিল মাসে সারাদেশে কয়েক লাখ ছাত্র চলমান কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য আন্দোলন শুরু করে। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের পাশাপাশি সচেতন শিক্ষক, অভিভাবক এবং সাধারণ মানুষকেও সমর্থন জানাতে দেখা যায়। যৌক্তিক দাবির কথা চিন্তা করে সরকারের উচ্চপর্যায়ের অনেকেই তাদের সঙ্গে আলোচনা, বৈঠকও করেছে। এদিকে স্বয়ং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে কোটা বিলুপ্তির/হ্রাসের ঘোষণা দেন। আন্দোলনকারীরা তাঁর কথায় আশ্বস্ত হয়ে আন্দোলন স্থগিত করে। যদিওবা আন্দোলনকারীদের কেউ কখনো বলেননি যে, কোটা বিলুপ্তি করতে। তাদের দাবি কোটা সংস্কার।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া আশ্বাসের দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য এবং সঠিক কোনো সিদ্ধান্ত না পেয়ে ছাত্রসমাজ আবারো আন্দোলনে নেমে পড়ে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, যৌক্তিক দাবি নিয়ে তাদের আন্দোলনে বাধা প্রদান করা হয়। শুধু তাই নয়, তাদের অনেককে খুবই মারাত্মকভাবে আহত করা হয়। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে তাদের উপর সরকারের ছাত্র সংগঠন তথা ছাত্রলীগ হামলা করছে। হামলার শিকার এসব সাধারণ শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, হামলাকারীরা যখন তাদের উপর চড়াও হয় কিংবা তাদের বাধা দিতে আসে তখন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ভূমিকা ছিল নীরব। তারা চাইলে এগিয়ে আসতে পারতো। বিশেষ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থীকে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের এক নেতা হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে তার শরীরের নানা জায়গা মারাত্মকভাবে জখম করে। যে দৃশ্য সারাদেশের প্রতিটা মানুষকে আহত করেছে। এখন কথা হচ্ছে, একটা গণতান্ত্রিক দেশে মানুষের কি বাকস্বাধীনতা প্রকাশের অধিকার নেই? মিছিল করা, সংবাদ সম্মেলন করা কিংবা মানববন্ধন এসব কি করার অধিকার নেই? নিশ্চয়ই আছে।

কিন্তু সেখানে বাধা প্রদান, মারধর করা, ভয় প্রদর্শন, হুমকি প্রদান কিংবা গ্রেপ্তার এসব কি সংবিধান কিংবা আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়?

ছাত্রসমাজ চায় কোটা পদ্ধতির সংস্কার। এটা তাদের যৌক্তিক দাবি। তাদের চাওয়া মেধা কোটা ৪৫ শতাংশকে যেন উন্নীত করা হয়। এতে করে লাভ শুধু আন্দোলনকারী কিংবা চাকরি প্রার্থীদেরই নয়, সরকার এবং দেশের জন্যও লাভ। এসব মেধাবী দেশের নানা পদে আসীন হয়ে নিজেদের সর্বোচ্চ যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে মা, মাটি, দেশের জন্য কাজ করে যাবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

আশার দিক হচ্ছে, সরকার চলমান কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা করার জন্য কমিটি গঠন করেছে। গত ৮জুলাই কমিটি তাদের প্রথম বৈঠকে বসেছে। আশাকরি তারা এদেশের এক কোটিরও বেশি তরুণ ছাত্রসমাজের যৌক্তিক দাবির কথা মাথায় রেখে কাজ করে যাবেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে যারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে, আগামীদিনে দেশ ও জাতির হাল ধরবে, তাদের কথা যেন চিন্তা করে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হবেন। কোটা বিলুপ্তি নয়,সংস্কারই হোক সঠিক ও সুন্দর পরিসমাপ্তি।

লেখক:শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

সৌজন্যে: দৈনিক ইত্তেফাক


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ - dainik shiksha প্রাথমিকের শিক্ষকদের ফের অনলাইনে বদলির সুযোগ তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার - dainik shiksha তীব্র তাপপ্রবাহের ভেতরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে রোববার দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রম ও কিছু কথা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার - dainik shiksha স্কুলে দুই শিফটের ক্লাস চালু রাখার সভা রোববার শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার আইডি ভাড়া নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাণিজ্য শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন - dainik shiksha নিষিদ্ধ, মৌলবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.013264894485474