কোদাল দিয়ে দুই ছাত্রীকে পেটানোর অভিযোগ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে

সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি |
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মঈনুল হক ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কোদাল দিয়ে দুই শিক্ষার্থীকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে। এইচএসসির টেস্ট পরীক্ষায় তারা অকৃতকার্য হওয়ায় শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে অধ্যক্ষ মতিউর রহমান কোদাল দিয়ে আঘাত করেছেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

 

 
 
আহত শিক্ষার্থীরা হলেন, সদর উপজেলার সাখাইতি গ্রামের মৃত মহর উদ্দিনের মেয়ে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী তাছলিমা খানম (১৯) এবং মাগুরা গ্রামের প্রবাসী মইনউদ্দিনের মেয়ে নাইমা বেগম (১৮)।
 
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার জন্য মঈনুল হক ডিগ্রি কলেজে টেস্ট পরীক্ষা নেয়া হয়েছিল। সেই পরীক্ষায় প্রায় ৬০ জনের মতো শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়। এতে ওই ৬০ জন শিক্ষার্থীকে অধ্যক্ষ ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে জানালে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের কাছে অকৃতকার্যের বিষয়টি বিবেচনা করে তাদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়ার অনুরোধ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অধ্যক্ষ মতিউর রহমান মাঠে থাকা কোদাল ও শাবল দিয়ে দুই শিক্ষার্থীকে পিটিছেন। এ ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীার সুনামগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। 
 
এ ব্যাপারে আহত শিক্ষার্থী নাইমা বেগম বলেন, এইচএসসির টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দিয়েছেন। এজন্য আজ আমরা অধ্যক্ষ স্যারের কাছে অকৃতকার্যের বিষয়টি বিবেচনার জন্য বললে স্যার মাঠে কাজ করা অবস্থায় শাবল ও কোদাল দিয়ে আমাকে ও আমার এক বান্ধবীর কোমরে এবং পায়ে আঘাত করেন। আমরা এর শাস্তি চাই।
 
মঈনুল হক ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সাখেরা আক্তার বলেন, আমরা অধ্যক্ষ স্যারকে টেস্ট পরীক্ষার অকৃতকার্যের বিষয়টি দেখার জন্য ও আমাদের খাতা দেখানোর অনুরোধ করলে তিনি আমাদের ওপর ক্ষেপে যান। এসময় তিনি মাঠে কাজ করা অবস্থায় ছিলেন। সেখানে রাখা শাবল ও কোদাল দিয়ে তাছলিমা ও নাইমাকে মারধর করেন। আমরা তার বিচার চাই।
 
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. কামরুল হাসান বলেন, নাইমার বাম পায়ের হাঁটুতে এবং ডান থাইয়ে রক্ত জমে গেছে এবং তাছলিমার ডান থাই একটু ফেটে গেছে। আমরা তাদের চিকিৎসা শুরু করেছি এবং তাদের ভর্তি রেখেছি।
 
এ ঘটনায় মঈনুল হক ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের সঙ্গে ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত তোলার প্রশ্নই আসে না। তারা এইচএসসির টেস্ট পরীক্ষায় কেউ ৩টি বিষয়ে, কেউবা ৪টি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে। আমাদের বিধান রয়েছে ৩-৪ বিষয়ে ফেল করা শিক্ষার্থীরা এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। তারা আমার কাছে অনুরোধ করেছিল বিষয়টা দেখার জন্য। আমি তো নিয়মের বাইরে যেতে পারি না। তাই তারা মোহনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে নিয়ে আসে আমার কাছে এবং বিষয়টি বিবেচনার জন্য বললে আমরা বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে ৫০-৫০ মার্কে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেই। সেখানেও একজন শিক্ষার্থী ছাড়া বাকিরা ১২-১৩ পেয়েছে। এজন্য আজকে তারা আমার কাছে আবার এলে আমি বলি এখন আর কিছু করার নেই। এ সময় সাব্বির নামে এক শিক্ষার্থী আমার গায়ে হাত তোলে এবং ওই সময় আমি মাঠে কাজ করা অবস্থায় থাকায় মাঠের কর্মচারীরা তাদের বাধা দেয়। কিন্তু আমি কারও গায়ে হাত তুলিনি।
 
সুনামগঞ্জ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সহিদুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করা হলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের - dainik shiksha পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার - dainik shiksha ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038001537322998