হাইকোর্টের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও রাজাপুরের বাদুরতলা দাখিল মাদ্রাসার ১৯ শিক্ষার্থী জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। গত ১ নভেম্বর এ পরীক্ষা শুরু হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের এক চিঠির বরাত দিয়ে মাদ্রাসা বোর্ড এই মাদ্রাসাটির পাসওয়ার্ড বন্ধ করে দেয়। তাই মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে পরীক্ষায় অংশ নিতে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আদালত থেকে পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশনা দিলেও বোর্ড কর্তৃপক্ষ তা মানেনি। এতে ১৯ পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার পাশাপাশি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এলাকাবাসীর রোষানলে পড়েছে। এ অবস্থায় মাদ্রাসাটির ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের আসন্ন এসএসসি সমমানের দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার বিষয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মাদ্রাসা সুপার মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ২০১৭ খ্রিস্টাব্দের দাখিল পরীক্ষার অনলাইনে ফরম পূরণের সময় পাসওয়ার্ড বন্ধ পাই। বোর্ড থেকে বলা হয়, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে পাসওয়ার্ড বন্ধ রাখা হয়েছে। এর পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাসওয়ার্ড খুলে দেওয়ার আবেদন করি। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় থেকে মাদ্রাসা বোর্ডের কাছে পরিদর্শন করে ২০১৭ খ্রিস্টাব্দের ৪ অক্টোবর প্রতিবেদন চেয়ে চিঠি পাঠায়। চিঠিতে ৫ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলা হয়। মাদ্রাসা বোর্ড কালক্ষেপণ করে ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে প্রতিবেদন পাঠায়।
প্রতিবেদনে মাদ্রাসাটির বিষয়ে সন্তোষজনক জবাব না দেওয়ায় কর্তৃপক্ষ ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়। মাদ্রাসাটির বন্ধকৃত পাসওয়ার্ড খোলা, নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন গ্রহণ, ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের জেডিসি পরীক্ষার ১৯ পরীক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন ও প্রবেশপত্র প্রদান এবং এডহক কমিটি গঠনের অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ অক্টোবর বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের দ্বৈত বেঞ্চে উল্লেখিত বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে বোর্ড কর্তৃক বন্ধ করা উল্লেখিত বিষয়গুলো ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে চার সপ্তাহের রুল জারি করেন বেঞ্চ।
মাদ্রাসা সুপার আরও জানান, উচ্চ আদালতের দেওয়া এই আদেশের কপি বোর্ডে পাঠানোর পর মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জেডিসি পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড চেয়ে গত ২৯ অক্টোবর আবেদন করে। কিন্তু বোর্ড কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় ১৯ পরীক্ষার্থী এ বছরের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া থেকে বঞ্চিত হয়। এ ঘটনায় এলাকায় পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।