বিতর্কিত ক্যামব্রিয়ান, মনিপুর, শাহীন ও সৃষ্টি স্কুল এন্ড কলেজসহ কয়েকডজন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বছরের পর বছর ধরে অবৈধ শাখা ও শ্রেণি শাখা চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ নিয়ে বেশকিছু অভিযোগ জমা পড়েছে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রণালয় থেকে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডকে এসব অবৈধ শাখা ব্যাপারে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। এরপর বোর্ড প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে তথ্য চেয়ে চিঠি দেয়। তবে, চিঠি পেয়ে বিতর্কিত এইসব প্রতিষ্ঠানের দালালরা বোর্ডের কতিপয় চিহ্নিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সাথে যোগাযোগ শুরু করেছেন। আবার ক্যামরিয়ানের পক্ষে টেলিভিশনের বুম ও সংবাদপত্রের কার্ডধারী কতিপয় শিবিরকর্মীও তদবির করেন।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের একজন কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, রাজধানী তথা দেশের বিখ্যাত স্কুলগুলোর বেশকিছু শ্রেণি ও শাখা চলছে, যেগুলোর অনুমোদন আছে বলে বোর্ডের জানা নেই। ওইসব শাখা-শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে, শিক্ষকও নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে চিহ্নিত কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেয়া হয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন নেই, সেগুলোকে প্রথমে কারণ দর্শাতে বলা হবে। সন্তোষজনক জবাব না পেলে প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের অনুমোদন বাতিলসহ বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সূত্র জানিয়েছে, ক্যামব্রিয়ান স্কুল এন্ড কলেজ, টাঙ্গাইলের শাহীন ও সৃষ্টি স্কুল এন্ড কলেজ, মিরপুরের মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের মূল ক্যাম্পাসের বাইরে অনেকগুলো ব্রাঞ্চ বা ক্যাম্পাস আছে। এর মধ্যে কয়েকটির অনুমোদন আছে। আবার কয়েকটি ক্যাম্পাসের অনুমোদন নেই। কেবল পাঠদানের অনুমতি দিয়েও চলছে । ৩ বছর পরপর তা নবায়নের বিধান আছে। শিক্ষা বোর্ডের অধিকাংশ সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সাথে ক্যামব্রিয়ান, সৃষ্টি ও শাহীন স্কুল এন্ড কলেজের রয়েছে ভালো সম্পর্ক।
মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফরহাদ হোসেন এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের বলেন, ১০ বছর আগে বিধি মোতাবেক সব ব্রাঞ্চের অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হলেও মূলটি বাদে আর কোনো শাখার অনুমোদন দেয়া হয়নি।
তিনি বলেন, গত পাঁচ বছর আগে আমরা এমপিও সমর্পণ (ফেরত) করেছি, তাই পাঠদানের অনুমোদন আমাদের জরুরি না। তাছাড়া বোর্ড থেকে কখনও এ বিষয়ে আপত্তি জানায়নি। সরকারি সব বিধি মেনে মনিপুর স্কুল পরিচালিত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ঢাকা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক ড. হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, এমপিও গ্রহণ বা বর্জনের সঙ্গে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার কোনো সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশের ভূখণ্ডের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে হবে শিক্ষা বোর্ডের বিধিবিধান মেনে। অনুমোদন ছাড়া প্রতিষ্ঠান কেউ পরিচালনা করতে পারে না।
তিনি প্রতিষ্ঠানটির অনুমোদন ৯ বছর না নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন, স্বীকৃতি ও শাখা খোলার অনুমতি দেয়ার দায়িত্ব বোর্ডের। কোনো প্রতিষ্ঠানই বোর্ডের ক্ষমতা নিজেরা প্রয়োগ করতে পারে না।
সূত্র জানায়, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বনশ্রী ক্যাম্পাসের অনুমোদন নেই। পাশাপাশি অনুমোদন নেই ওই ক্যাম্পাসের কোনো শাখা-শ্রেণির। আরও কিছু শ্রেণি-শাখার অনুমোদন নেই বলে জানা গেছে। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৩০টির মতো বাংলা-ইংরেজি ভার্সনের শাখা-শ্রেণির অনুমোদন নেই।
এসব কারণে প্রথম দফায় ৯ ফেব্রুয়ারি সব ক্যাম্পাস ও অতিরিক্ত শ্রেণি-শাখা খোলার অনুমতি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে বলা হয়। পরে ১১ ফেব্রুয়ারি আরেক চিঠিতে সব ক্যাম্পাস ও অতিরিক্ত শ্রেণি-শাখার শিক্ষার্থী সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়েছে।
আউডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের বিরুদ্ধে জামাতপন্থী ও ভবঘুরে কতিপয় অভিভাবক ও নামধারী সাংবাদিক সক্রিয় রয়েছে কয়েকবছর ধরে। ভর্তিতে তাদের অবৈধ আবদার পুরণ না করায় আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার করে আসছে ভবঘুরে অভিভাবকরা।
জানা গেছে, এভাবে আরও বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের শাখা চলছে অবৈধভাবে। অনেক প্রতিষ্ঠান দেশজুড়ে ক্যাম্পাস খুলে বসেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে টাঙ্গাইলভিত্তিক শাহীন স্কুল ও কলেজসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আছে।
আবার কিছু প্রতিষ্ঠান আছে বছরের পর বছর পাঠদানের মেয়াদ বৃদ্ধি করে না। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের একটি টঙ্গীর সাহাজউদ্দিন সরকার আদর্শ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এই অপরাধে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষকে ১১ ফেব্রুয়ারি শোকজ করেছে ঢাকা শিক্ষা বোর্