ক্লাস না করেই বেতন তুলছেন শিক্ষক

মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) |

ক্লাস না করেই বেতন তুলছেন পটুয়াখালীর কলাপাড়ার হাজীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুস সাত্তার। বদলি শিক্ষক হিসেবে প্রক্সি ক্লাস করছেন তার ছেলে মো. সোয়েব। স্কুল ম্যানেজিং কমিটিসহ শিক্ষকরা বিষয়টি গোপন করে রাখলেও সম্প্রতি বাবা-ছেলের প্রক্সির বিষয়টি সংবাদকর্মীদের কাছে ফাঁস হয়ে যাওয়ায় শারীরিক অসুস্থতার জন্য স্কুলে যেতে পারেননি বলে জানিয়েছেন শিক্ষক আব্দুস সাত্তার। 

জানা যায়, অসুস্থতার কারণে শিক্ষক আব্দুস সাত্তার বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলেও হাজিরা খাতায় তিনি নিয়মিত উপস্থিত রয়েছেন। গত ৫ মে শিক্ষক আব্দুস সাত্তার ব্রেন স্ট্র্রোক করে অসুস্থ হয়ে পড়লে তারপর থেকে তার বদলি হিসেবে ক্লাস নিচ্ছেন তার ছেলে সোয়েব। 

অথচ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকরা বলছেন, আব্দুস সাত্তার অসুস্থ থাকলেও তিনি বিদ্যালয়ের ক্লাস নিয়েছেন। তার ছেলে সোয়েব প্যারা শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অনুপস্থিতির বিষয়টি মিথ্যা।
বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা জানান, শিক্ষক সংকটের কারণে এমনিতেই বিদ্যালয়ে ঠিকমতো ক্লাস হয় না। প্রধান শিক্ষক বেশিরভাগ সময়ই অনুপস্থিত থাকেন। সাত্তার স্যার অসুস্থ হয়ে প্রায় তিন মাস ক্লাসে অনুপস্থিত। স্যারের পরিবর্তে মাঝে মধ্যে তার ছেলে ক্লাস নেয়। বিষয়টি শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা জানলেও এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১২ আগস্ট বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষক মো. শাহ জালাল ও সহকারী শিক্ষক আব্দুস সাত্তারকে পাওয়া যায়নি। হাজিরা খাতায় সহকারী শিক্ষক রাশিদুজ্জামান খান, পরেশ চন্দ্র মজুমজার, মোসাম্মাৎ সাফিয়া বেগম ও মো. আমান উল্লাহর সাক্ষর পাওয়া গেলেও বাস্তবে উপস্থিত পাওয়া গেছে রাশিদুজ্জামান খান ও মো.আমানউল্লাহকে। অন্য শিক্ষকদের ব্যাপারে কোন শিক্ষকই কোন তথ্য দিতে রাজি হননি।
শিক্ষক সাত্তারের ছেলে মো. সোয়েব জানান, তার পিতা গত ৫ মে অসুস্থ। তাঁকে বরিশালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়েছে। বাবা ব্রেন স্ট্র্রোক করায় বাবার পরিবর্তে তিনি ক্লাস নিচ্ছেন।
শিক্ষক আব্দুস সাত্তার জানান, অসুস্থ থাকায় নিয়মিত স্কুলে যেতে পারেননি। তবে এখন অনেক সুস্থ। এখন থেকে নিয়মিত স্কুলে যাবেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহ জালাল দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, শিক্ষক আব্দুস সাত্তার নিয়মিতই ক্লাস নিয়েছেন। তার বদলি কেউ ক্লাস নেয়নি। হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দেখলেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুস সাত্তার কিভাবে হাজিরা খাতায় সাক্ষর দিয়েছেন জানতে চাইলে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। তবে মো. সোয়েব মৌখিকভাবে প্যারা শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন বলে স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার ও ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান, এ বিষয়টি তিনি অবহিত নন। তদন্ত করে দোষী প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.015846967697144