রাজধানীর খিলক্ষেতের রেসিডেন্সিয়াল ল্যাবরেটরি কলেজ। ৬ বছর আগে পাঠদানের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। কমিটি নেই ৫ বছরের বেশি সময় ধরে। ঢাকা বোর্ডের হুশিয়ারির পরেও শিক্ষার্থীদের টিসি (ছাড়পত্র) প্রদানে কলেজটিতে নেয়া হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। এসব অভিযোগে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে শোকজ করা হলেও তা আমলে নেয়নি কলেজ কর্তৃপক্ষ। ৬ বছর পার হলেও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডকে শোকজের জবাব দেয়ার প্রয়োজন বোধ করেনি রেসিডেন্সিয়াল ল্যাবরেটরি কলেজ। স্বেচ্ছাচারিভাবে কলেজ পরিচালনা করছেন তথাকথিত চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান সুমন। এমন তথ্যই উঠে এসেছে দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজটির কয়েকজন কর্মচারী দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান, কলেজটির সর্বেসর্বা চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান সুমন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে বিভাস ঘটক নামের একজন রয়েছেন ‘শো পিস’ হিসেবে। বছরের বেশির ভাগ সময়ের মত এখনো ছুটিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। চেয়ারম্যান সুমন স্যারের সুনজরে না থাকলে বেতন জুটে না বলে জানান কলেজটির অপর এক কর্মচারী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, মানিক মিয়া নামে একজন পিয়ন সাড়ে ৩ বছর কর্মরত ছিলো কলেজে। কিন্তু হঠাৎ বেতন বন্ধ হয়ে যায় তার। ৪ মাস বেতন না পেয়ে গত নভেম্বরে কর্তৃপক্ষের মুখোমুখি হলে চেয়ারম্যান সুমন মারধর করেন পিয়ন মানিক মিয়াকে।
স্থানীয় একাধিক সূত্র দৈনিক শিক্ষাকে জানায়, একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে তার মালিক বনে গেছেন রেসিডেন্সিয়াল ল্যাবরেটরি কলেজের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান সুমন। অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে কলেজটির হোস্টেলের বাসাভাড়া দেন না তিনি। মালিক পক্ষের সাথে বাসাভাড়া নিয়ে কয়েকদফায় অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। রাতের আঁধারে ছাত্রী হোস্টেলে ঢুকে মেয়েদের হয়রানী করার অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যান সুমনের বিরুদ্ধে।
ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সূত্র দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানায়, কলেজটির পাঠদানের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১২ খ্রিস্টাব্দের ৩০ জুন। কিন্তু এখনো তারা মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন না করে অবৈধভাবে কলেজ পরিচালনা করে আসছে রেসিডেন্সিয়াল ল্যাবরেটরী কলেজ। কলেজটির কমিটির মেয়াদ শেষ হছে ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের ৩ জুলাই কলেজটির কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও তা গঠন করা হয়নি। কলেজটির স্বীকৃতির জন্য বিধি মোতাবেক আবেদনও করা হয়নি।
সূত্র আরও জানায়, কলেজেটির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের টিসি প্রদানে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে লিখিতভাবে বোর্ড থেকে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষকে জানানো হলেও তিনি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। এর আগে বিভিন্ন অভিযোগে ২০১২ খ্রিস্টাব্দের ১৩ মে রেসিডেন্সিয়াল ল্যাবরেটরি কলেজকে শোকজ করা হয়েছিলো। ৬ বছর পরেও তার জবাব দেননি অধ্যক্ষ। এসব অভিযোগে কলেজটিকে আবারো শোকজ করা হয়েছে। এতসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে কলেজটির একাডেমিক স্বীকৃতি কেন বাতিল করা হবে না তার ব্যাখ্যা লিখিতভাবে বোর্ডে পাঠাতে বলা হয়েছে কলেজের অধ্যক্ষকে।
অভিযোগের বিষয়ে আজিজুর রহমান সুমনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি উত্তেজিত হয়ে দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, যা জানার ঢাকা বোর্ড থেকে জেনে নেন।