গণশিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষকদের বেতন জটিলতা নিরসন হচ্ছে শিগগিরই

নিজস্ব প্রতিবেদক |

সারাদেশের মসজিদ, মন্দির ও মক্তব ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষকরা গত চার মাস বেতন পাচ্ছেন না। গত ডিসেম্বরে ইসলামি ফাউন্ডেশনের আওতায় কার্যক্রমের প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তাদের বেতন-ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। চার মাস বেতন বকেয়া থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। তবে, শিগগিরই এ জটিলতা নিরসন হচ্ছে। নতুন প্রকল্প অনুমোদন হলেই শিক্ষকরা বকেয়া বেতন পাবেন বলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আশ্বস্ত করেছেন ইসলামী ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা।

কর্মকর্তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, শিক্ষকদের বেতন জটিলতা যাতে তাড়াতাড়ি নিদর্শন হয় সে লক্ষ্যে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। প্রকল্প অনুমোদন হলেই তাদের বেতন জটিলতা নিরসন করা হবে। খুব শিগগিরই প্রকল্পটি অনুমোদন হওয়ার কথা আছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মসজিদ, মন্দির ও মক্তব ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের প্রকল্প পরিচালক ফারুক আহম্মেদ সোমবার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষকদের দুরবস্থার বিষয়টি আমি অবগত আছি। নতুন প্রকল্পটি খুব শিগগিরই অনুমোদনের কথা আছে। জটিলতা নিরসনে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি জটিলতা নিরসন হবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কুড়িগ্রাম জেলা উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, সর্বশেষ একনেক বৈঠকে প্রকল্পের অনুমোদন হওয়ার কথা ছিল। করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রকল্প অনুমোদন না হওয়ায় বিলম্ব হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে যথেষ্ট আন্তরিক। আশা করা যায় অল্প কিছু দিনের মধ্যেই শিক্ষকরা সম্মানী পেয়ে যাবেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ২২ মার্চ ইসলামি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। এরপরই শিশুদের নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষার জন্য মসজিদ মন্দির ও মক্তব ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থ চালু করে ফাউন্ডেশন। এসব মসজিদ, মন্দির ও মক্তবের শিশুদেরকে পাঠদানের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন শিক্ষক নিয়োগ দেয়। শিক্ষকরা নিয়মিত পাঠদান করছেন।

দিনাজপুর জেলার ভুক্তভোগী শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, জেলার ১৩টি উপজেলায় প্রায় ১৫০০ মসজিদে শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। শিক্ষকরা চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত বেতন বকেয়া রয়েছে। সর্বশেষ গত ডিসেম্বর মাসে বেতন পান তারা। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত শিক্ষকদের বকেয়া বেতনভাতা পরিশোধ করা হয়। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বেতন বকেয়া রয়েছে। এ মাসেও যদি বেতন ভাতা না দেয়া হয়, তাহলে পরিবার চালানো এদের জন্য কষ্টকর হয়ে যাবে। এমনিতেই প্রকল্পের শিক্ষক-শিক্ষিকারা পরিবার পরিজন নিয়ে চরম মানবেতর জীবন যাপন করছে।

পিরোজপুরের কাউখালী ভুক্তভোগী শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, প্রায় ৬০ জন শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে উপজেলার শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাচ্ছি। এরই মধ্যে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে মসজিদ মন্দির ও মক্তব ভিত্তিক শিক্ষা কেন্দ্রের পাঁচ বছর মেয়াদী প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। শিক্ষকরা পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন। নতুন বছরে বই উৎসব করেছেন। নতুন বছরের চার মাস অতিবাহিত হলেও মসজিদ মন্দির ও মক্তব ভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রমের প্রকল্প অনুমোদন না হওয়ায় উপজেলার ৬০ জন শিক্ষক কর্মচারীর বেতন পাননি। গত চার মাস যাবৎ বেতন ভাতা না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। 

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে জানান, চার মাস যাবত বেতন পাই না, ধার-দেনা করে সংসার চালাচ্ছি, পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন পার করছি। সামাজিক অবস্থানের কারণে আপদকালীন ত্রাণ সহায়তা নিতে লাইনে দাঁড়াতে পারছি না। সামনে ঈদ-উল-ফিতর অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় বকেয়া সম্মানী ভাতা ও ঈদ বোনাস না পেলে আমাদের ঈদ উদযাপন বেদনায় পরিণত হবে। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিকট আমাদের আকুল আবেদন, মানবিক দিক বিবেচনা করে দ্রুত বকেয়া সম্মানী ভাতাসহ ঈদ বোনাস প্রদান করুন। শিক্ষকরা আরও জানান, মাসিক চার হাজার পাঁচশত টাকা বেতন পান। প্রত্যেকবারই প্রকল্প মেয়াদ শেষে শিক্ষকদের এরূপ ভোগান্তি পোহাতে হয়, যা একরকম নিয়মে পরিণত হয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি - dainik shiksha কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0051620006561279