কুড়িগ্রামের রৌমারীতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের বাসায় তার সামনেই নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ কনস্টেবলকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। প্রতিমন্ত্রীর বাসার সামনে স্তুপ করে রাখা রান্না করার লাকড়ি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়েছে মন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কনস্টবল আবু সায়েমকে। দুস্থ হিন্দু পরিবারের মাঝে ত্রাণসামগ্রী ও কাপড় বিতরণের সময় হট্টগোলের সৃষ্টি হয় বলে জানা যায়।
এ সময় নাজমুল হাসান জুয়েল নামের সদ্য ছাত্রলীগে যোগদেয়া একজন কর্মী ওই কনস্টেবলের কলার ধরে কিলঘুষি ও লাকড়ি দিয়ে পেটান। জুয়েল মন্ত্রীর চাচাতো ভাইয়ের ছেলে বলে জানা যায়। রোববার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে রৌমারী গ্রামে প্রতিমন্ত্রীর বাসার সামনে এ ঘটনা ঘটে। জাকির হোসেনের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই জুয়ের ছাত্রদল ছেড়ে ছাত্রলীগে যোগ দেন বলে জানা যায়।
অপর সূত্রমতে, রৌমারী থানার ওই কনস্টেবলকে অন্যায়ভাবে মারধরের পরপরই গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জুয়েলকে ধমক দিয়ে মীমাংসার চেষ্টা করেন। কিন্তু আহত কনস্টেবল আবু সায়েম তাতে খুশি হতে না পেরে থানায় গিয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে বিচার চান। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেন। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় যান তিনি।
আহত পুলিশ সদস্য আবু সায়েম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা চারজন পুলিশ সরকারি দায়িত্ব পালন করছিলাম। প্রতিমন্ত্রী স্যার কাপড় ও ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছিলেন। অনেক মানুষ উপস্থিত হওয়ায় হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। এ সময় জুয়েল আমাদের গালিগালাজ করতে থাকে। গালি দিচ্ছেন কেন- জিজ্ঞেস করতেই আমার কলার চেপে ধরে কিলুঘষি ও লাথি মারতে শুরু করে। পরে স্যার এসে তাকে ধমক দিয়ে চড়থাপ্পড় মেরে দুঃখ প্রকাশ করেন।
এদিকে প্রতিমন্ত্রীর নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ সদস্যকে মারধরের ঘটনায় থানার সব পুলিশ সদস্যের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার পরপরই আমি তাকে (জুয়েল) থাপ্পড় মেরে বাসা থেকে বের করে দিয়েছি। হঠাৎ করেই ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশের গায়ে হাত দিয়ে সে অন্যায় করেছে।
এ ব্যাপারে রৌমারী থানার ওসি হাসান ইনাম বলেন, এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।