গ্রামীণফোন, বাংলালিংক ও রবি এই তিন মোবাইল ফোন অপারেটর গত পাঁচ বছরে গুগল ও ফেসবুককে আট হাজার ৭৪৪ কোটি ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) হাইকোর্টে দাখিল করা এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন ‘বিটিআরসি’। বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
আদালতে বিটিআরসির পক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করেন আইনজীবী একেএম আলমগীর পারভেজ। রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। শুনানিকালে বিটিআরসির সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের উপপরিচালক প্রকৌশলী মো. নাহিদুল হাসান স্বাক্ষরিত ওই প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। তবে একই বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আরেকটি প্রতিবেদন দাখিল করে। সে প্রতিবেদনে সন্তুষ্ট না হতে পেরে এনবিআরকে পুনরায় প্রতিবেদন দাখিলে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ইন্টারনেটভিত্তিক সব ধরনের প্রতিষ্ঠান থেকে রাজস্ব আদায়ে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তাও এনবিআরকে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৯ এপ্রিল সার্চ ইঞ্জিন গুগল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ ইন্টারনেটভিত্তিক সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব ফাঁকির বিরুদ্ধে রিট দায়ের করা হয়। রিট আবেদনে, ইন্টারনেটভিত্তিক সব প্রতিষ্ঠানকে করের আওতায় আনা, প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে পরিচালনার জন্য নীতিমালা প্রস্তুত করা, প্রতিষ্ঠানগুলো কী পরিমাণ টাকা নিচ্ছে তার জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি এবং সেই কমিটি দিয়ে বিগত ১০ বছরে কী পরিমাণ অর্থ নেওয়া হয়েছে তা নিরূপণের নির্দেশনা চাওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টের ছয় আইনজীবীর পক্ষ থেকে এই রিট দায়ের করা হয়।
এরপর ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ এপ্রিল সার্চ ইঞ্জিন গুগল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ ইন্টারনেটভিত্তিক সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব ফাঁকির তদন্তের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। এলক্ষ্যে বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটি গঠনে অর্থ মন্ত্রণালয় সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, এনবিআর চেয়ারম্যান, আইন মন্ত্রণালয় সচিব, তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সচিব, বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া ইন্টারনেট মাধ্যমগুলোর মাধ্যমে বিজ্ঞাপন, ডোমেইন বিক্রি এবং বিভিন্ন ধরনের লাইসেন্স বিক্রির ফি সহ যেকোনও লেনদেনের বিপরীতে যে পরিমাণ টাকা পরিশোধ করা হয় তার থেকে আদায়যোগ্য রাজস্ব সংগ্রহ করতে বলা হয়।
একইসঙ্গে ইন্টারনেটভিত্তিক কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় রাজস্ব আদায়ে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়।