নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে মামলা-গ্রেফতারের সংখ্যা বাড়ছে। ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি ও ক্রাইম ইউনিট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানো ও উস্কানি দেয়ার অভিযোগে আরো ৬০টি ফেসবুক আইডি নজরদারিতে রেখেছেন। এসব আইডির বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়েছে। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত, ফেসবুকে করা মন্তব্য ও শেয়ার করা ভিডিও বিশ্লেষণ করে যাচাই-বাছাই চলছে। খুব শিগগিরই অভিযান চালিয়ে এসব আইডির মালিকদের গ্রেফতার করা হতে পারে।
যেসব আইডি নজরদারিতে রাখা হয়েছে এসব আইডির মালিকদের মধ্যে শিক্ষক, চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, তথ্যপ্রযুক্তিবিদ এবং শোবিজ অঙ্গনের লোক রয়েছেন। তাদের বয়স ২২ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি ও ক্রাইম ইউনিট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সাইবার ক্রাইম ইউনিট সূত্র বলছে, আন্দোলন চলাকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে হত্যা, নারী শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে ধর্ষণ ও সরকারবিরোধী নানা মন্তব্য করেছিল।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ লিখিত মন্তব্য আবার কেউ ফেসবুক লাইভে এসে কথা বলেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মনে করছেন এ ধরনের মন্তব্য নিতান্তই গুজব। তাই এসব গুজব ছড়ানোর অভিযোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রায় এক হাজার আইডি শনাক্ত করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি ও ক্রাইম ইউনিট। ২০০-২৫০ আইডির মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদেরকে ডেকে এনে আলাদাভাবে কথা বলেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মনিটরিং ইউনিট।
বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এদের অনেকেই অনেকটাই হুজুগে এসব পোস্ট শেয়ার করেছেন। তাদেরকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের পর সতর্ক করে ছেড়ে দেয়া হয়। আবার অনেকে তাদের নিজ অবস্থানে অটল থেকে আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য এবং জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াতে উসকানি দিয়েছেন। ডিএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিট এ ধরনের ৭০টি আইডির বিরুদ্ধে মামলা করে।
সাইবার ক্রাইম ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে গুজব ও উস্কানি দেয়ার অভিযোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় এখন পর্যন্ত ১৮টি মামলা হয়েছে। সর্বশেষ মামলাটি করা হয় তারেক আজিজ নামের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।
ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি ও ক্রাইম ইউনিট (সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম) অতিরিক্ত উপকমিশনার নাজমুল ইসলাম বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করেছিল সে আন্দোলনে সরকারের পাশাপাশি পুলিশেরও একাত্মতা ছিল। তাদের দাবিগুলো মেনে নেয়া হয়েছে। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে আছি। তাদের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকব। নাজমুল বলেন, শিক্ষার্থীরা আমাদের টার্গেট নয়। আমরা তাদের টার্গেট করেছি, যারা শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করার চেষ্টা করেছে। নিজেদের স্বার্থে দেশ ও জাতির ক্ষতি করার জন্য আন্দোলনে ঢুকে গুজব-উস্কানি ছড়িয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে গিয়েছি। আন্দোলনকে যারা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।