কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও পরিবারের সদস্যরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শুক্রবার (১৭ আগস্ট) মানববন্ধন করেছেন। তাঁরা গ্রেফতার শিক্ষার্থীদের মুক্তির অনুরোধ করেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানের মা ঝিনাইদহের সালেহা বেগম। ছেলের মুক্তি চেয়ে তিনি বলেন, ‘আমার বাবা কোনো অপরাধ করেনি। আমার বাবাকে ছেড়ে দিন। বাবাকে ছাড়া আমি ইদ করতে পারব না। বাবার সঙ্গে ইদ করতে দিন। ইদের আগে বাবাকে ছেড়ে দিন।’
কোটা আন্দোলনের আরেক নেতা তারিকুল ইসলামের বাবা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ছেলে ছাত্রলীগের রাজনীতি করত। পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতে পাঠিয়েছিলাম। আন্দোলন করে সে এখন কারাগারে। কার কাছে গেলে ছেলেকে ফিরে পাব?’
তারিকুলসহ কোটা আন্দোলনে গ্রেফতার হওয়া অন্যান্য শিক্ষার্থীর মুক্তি দাবি করেন শফিকুল ইসলাম।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগী পরিবারের প্রতি রাজনৈতিক নেতা, মানবাধিকারকর্মী, শিক্ষক ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন সংহতি জানান।
মানববন্ধনে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘হাতে দড়ি বেঁধে ছাত্রদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে—এটা সভ্য সমাজের লক্ষণ না। মানুষকে কথা বলতে দিন।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘মুখ বন্ধ সমাজের মা হবেন না। সব জায়গায় ভূত দেখা ছাড়েন। ভুল পথে চালিত হবেন না।’
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন ছিল নিরাপদ আন্দোলন। এটি সরকারবিরোধী বা সরকার পতনের কোনো আন্দোলন ছিল না। দেশের ১৬ কোটি মানুষই চাই—সড়ক নিরাপদ হোক। মন্ত্রী, সাংসদ সবাই বলছেন, আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের গ্রেফতার করা হবে। অথচ সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না।’
নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের সময় দায়িত্বরত সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীদের বিচার দাবি করেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক নূর খান।