ঘুষের অর্ধকোটি টাকা নিয়ে শিক্ষা অফিসার-শিক্ষক নেতাদের পাল্টাপাল্টি

শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি |

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অর্ধ কোটি টাকা ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) অভিযোগ তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘুষ আদায়ের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে দৌড় ঝাপ শুরু করেছে উপজেলার শিক্ষক-শিক্ষা কর্মকর্তারা। সকাল নয়টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত একটি শিক্ষক সংগঠনের অফিসে চলে তাদের মধ্যে আলোচনা। অভিযোগ ধামাচাপা দিতে শিক্ষক নেতারা শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করেছেন।

জানা গেছে, শ্যামনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আক্তারুজ্জান মিলনসহ সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ১৯১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন খাতের বরাদ্ধ, ফিঙ্গার প্রিন্ট মেশিন ক্রয়, স্লিপসহ বিভিন্ন উৎসের থেকে অর্ধ কোটি টাকা ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগটি তদন্ত শুরু করেছে জেলা শিক্ষা অফিস। সাতক্ষীরা জেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার (এডিপিও) আবু হেনা মোস্তফা কামালকে তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন। বুধবার তিনি শ্যামনগর উপজেলায় এসে অভিযোগ তদন্ত শুরু করেছেন।

এদিকে এ ইস্যুকে সামনে রেখে নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে তৎপর হয় অভিযুক্ত কর্মকর্তারা। জানা গেছে, তারা মঙ্গলবার সকাল নয়টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত শ্যামনগরের উপজেলা সদরে অবস্থিত একটি শিক্ষক সংগঠনের কার্যালয়ে ম্যারাথন বৈঠক করেছেন। কয়েকটি সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, শিক্ষক সংগঠনটির নেতারা শিক্ষা কর্মকর্তাদের অর্ধকোটি টাকার ভাগ চেয়েছেন। শিক্ষক নেতারা সংগঠনের ভবন নির্মাণের জন্য ১০ লাখ টাকা দাবি জানিয়েছে। টাকা না দিলে ঘুষের তথ্য ফাঁস করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।

এদিকে ঘুষের কোটি টাকা ভাগাভাগি নিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার আক্তারুজ্জামানের সাথে সহকারী শিক্ষা অফিসারের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। এক পর্যায়ে চার সহকারী শিক্ষা অফিসার, উপজেলা শিক্ষা অফিসার আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে শ্যামনগর থানায় গত ৯ সেপ্টেম্বর বুধবার নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি করেছেন। শিক্ষা কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান তাদেরকে নারী দিয়ে মিথ্যা মামলায় জড়াতে পারেন এমন অভিযোগ দেয়া হয়েছে। 

তবে শিক্ষক নেতাদের সাথে আলোচনা শেষে ৪ শিক্ষা অফিসারের সাধারণ ডায়েরি তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা স্থানীয় থানায় যায় জিডি তুলে নিতে গেলে থানা অফিসার ইনচার্জ নাজমুল হুদা তাদেরকে জানান, জিডি তোলা যায় না। মিমাংসা হয়ে থাকলে স্টাম্পে আপোষ নামা তৈরি করে নিয়ে আসেন। 

স্থানীয় শিক্ষকরা জানান, ঘুষের কোটি টাকা থেকে বিভিন্ন সেক্টরে ভাগ দিতে হচ্ছে। ফলে ঘুষের টাকা বদহজম হচ্ছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আক্তারুজ্জান মিলন জানান, ভুল বোঝাবোঝি বিরোধ সৃষ্টিতে তার বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা জেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আবু হেনা মোস্তফা কামাল তদন্ত করেন, ৫০ লাখ টাকা ঘুষ নেয়া বা ১০ লক্ষ টাকা শিক্ষক নেতাদের ভাগ দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002936840057373