দিনাজপুরের ডিএডি ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল টেকনোলজি নামের একটি শিক্ষালয় আগাম ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ওই প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় অনুমোদিত এবং রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদের অধিভুক্ত, যা দিনাজপুর ডায়াবেটিক ও স্বাস্থ্যসেবা হাসপাতালের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হয়ে আসছিল। শিক্ষার্থীরা গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দিনাজপুর ডায়াবেটিক ও স্বাস্থ্যসেবা হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ করেছে। এ সময় তারা ফরম পূরণ ও পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা না করেই ইনস্টিটিউট একেবারে বন্ধ ঘোষণা করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে।
জানা যায়, দিনাজপুর ডায়াবেটিক ও স্বাস্থ্যসেবা হাসপাতাল ২০১০ সালে প্যাথলজি ও রেডিওলজি দুটি কোর্স নিয়ে ডিএডি ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল টেকনোলজি নামের প্রতিষ্ঠানটি চালু করে। ঈদুল আজহার ছুটির পর গতকাল মঙ্গলবার কলেজ খোলার কথা ছিল। এ দিনেই চূড়ান্ত বর্ষের শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণের শেষ তারিখ বলে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। গতকাল সকালে শিক্ষার্থীরা ফরম পূরণ করতে এসে ডিএডি ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল টেকনোলজির গেটে তালা ও নোটিশ দেখতে পায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানপ্রধান এবং দিনাজপুর ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগ করে। প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের ব্যাপারে তাঁরা কেউই সদুত্তর দিতে পারেননি। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্র সাহাদত হোসেন জানান, কলেজ একেবারে বন্ধের ব্যাপারে তাঁদের আগে কিছুই জানানো হয়নি। ফরম পূরণ করতে এসে দেখেন কলেজ একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে তাঁরা চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছেন। কলেজ কর্তৃপক্ষও তাঁদের কিছু জানাচ্ছে না। চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্ররা কোথায় কিভাবে ফরম পূরণ ও পরীক্ষা দেবে তা তারা জানে না। এখন ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে তারা।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানায়, চার বছরের কোর্সের আট সেমিস্টারে তাদের প্রায় দুই লাখ টাকা সেমিস্টার ফি ও বেতন দিতে হয়েছে। অন্যান্য খরচ তো ছিলই। এ নিয়ে তারা আন্দোলন গড়ে তুলবে। কারণ শিক্ষার্থীদের কোনো ব্যবস্থা না করে কলেজ বন্ধ হতে পারে না। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কারো নেই।
এ ব্যাপারে দিনাজপুর ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সফিকুল হক ছুটু বলেন, অনেক ব্যাপার রয়েছে। অনিয়ম-দুর্নীতি, শিক্ষার্থীদের অনিয়মিত উপস্থিতি এবং লোকসানের কারণে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করা হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা. মো. লিয়াকত আলী বলেন, ‘আমি কিছুই জানি না। কমিটির সদস্যরা বলতে পারবেন।’ প্রতিষ্ঠানপ্রধান হিসেবে আপনি কিছুই জানেন না, এটা কি আপনি বলতে পারেন—এ প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি দায়িত্বে আছি মাত্র।’
আজ বুধবার সকালে শিক্ষার্থীরা দিনাজপুর ডায়াবেটিস ও স্বাস্থ্যসেবা হাসপাতালের প্রধান ফটকে সকাল ৮টা থেকে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করবে।