চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে দু’পক্ষের কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চট্টগ্রামে ছুটে এসেছেন সংগঠনটির খোদ কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। সংগঠনটির শীর্ষ এ নেতার সফরের মাঝেও বিক্ষোভে করেছে কলেজ ছাত্রলীগের একাংশ।
সূত্র জানায়, ইতোমধ্যেই চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের পদ পাওয়া ও পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন ছাত্রলীগ সভাপতি মো. রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে অাওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরীর চশমা হিলের বাসায় পদ পাওয়া নেতাকর্মীদেরর সঙ্গে এবং পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের সঙ্গে নগরের লালখান বাজার অামিন সেন্টারে কথা হয় শোভনের। এসময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের চট্টগ্রাম কলেজে গঠিত কমিটি নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনের অাশ্বাস দেন তিনি।
ছাত্রলীগ সভাপতির এ সফরের মাঝেই মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রাম কলেজ ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে ছাত্রলীগের একপক্ষ বিক্ষোভ করেছে। এসময় তাদের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম কলেজ কমিটি দেয়ার পেছনে টাকার লেনদেন হয়েছে বলেও অভিযোগ তোলা হয়। বিক্ষোভকারীরা ‘টাকার বিনিময়ে প্রহসনের কমিটি মানি না’; ‘কমিটি নিয়ে ব্যবসা কেন, কেন্দ্রীয় কমিটির জবাব চাই’ স্লোগান দেয় এবং প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে।
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সকালে ছাত্রলীগের একটি পক্ষ চট্টগ্রাম কলেজের মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছে। এসময় তারা নানা ধরনের প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে। তবে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। নিরাপত্তার জন্য চট্টগ্রাম কলেজ ও আশপাশের এলাকাতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
জানা গেছে, চট্টগ্রাম কলেজে যখন কমিটি নিয়ে ছাত্রলীগের একাংশের বিক্ষোভ চলছিল, তখন চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রলীগের নবনির্বাচিত সভাপতি মাহমুদুল করিমকে নিয়ে নগর অাওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মো. রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। এসময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আদিত্য নন্দী, নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল অাজিম রনি প্রমুখ। পরে সেখান থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যান শোভন। সেখানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদেরকে নানা দিক-নির্দেশনা দেন।
বিকেলে নগর অাওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন ছাত্রলীগ সভাপতি।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদন দেয়া নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে মুখোমুখি অবস্থান রয়েছে নগর ছাত্রলীগের দুই পক্ষ। গত মঙ্গল ও বুধবারের (১৮ ও ১৯ সেপ্টেম্বর) সংঘর্ষের পর ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এর আগে সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরী ও ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি নেয়া নুরুল আজিম রনির অনুসারী হিসেবে পরিচিত মাহমুদুল করিমকে সভাপতি এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির অনুসারী সুভাষ মল্লিক সবুজকে সাধারণ সম্পাদক করে প্রথমবারের মতো এই কলেজে ছাত্রলীগের কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়।