চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ জাহেদ খানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি আবার তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের আদালত। চকবাজার থানার উপ পরিদর্শক বদিউলের দেওয়া ‘দায়সারা’ তদন্ত প্রতিবেদনে অনাস্থা প্রকাশ করে বাদি মামলাটি পুনঃতদন্তের আবেদন জানালে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক আবু সালেম মোহাম্মদ নোমান এই নির্দেশ দেন।
২০১৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ জাহেদ খানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব ছিল চকবাজার থানা পুলিশ। এদিকে এ মামলার তদন্তে তদন্তকারী পুলিশের দায়সারা চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে বাদি না-রাজি দাখিল করে।
রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে বাদি নুরুল আজিম রনির জবানবন্দি নিয়ে না-রাজির প্রেক্ষিতে আদালত পুনঃতদন্তের জন্য পুনরায় পিবিআইকে নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী।
মামলার বাদি ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি জানান, ‘৮৮ জন ছাত্রকে বিজ্ঞান কলেজে ভর্তি করানোর কথা বলে তাদের নামসর্বস্ব ভিন্ন একটি কলেজে রেজিস্ট্রেশন করান প্রতারক জাহেদ খান। প্রতারণার অভিনব এমন কৌশলের মাধ্যমে এই প্রতারক জাহেদ খান প্রতিটি ছাত্র থেকে লাখ লাখ টাকা দুই বছরে হাতিয়ে নেয়। এ কারণে ২০১৮ সালে আমি জাহেদ খানের বিরুদ্ধে নগরীর চকবাজার থানায় মামলা দায়ের করি। পুলিশ এ মামলার তদন্তে নেমে প্রতারণার শিকার ৮৮ জন ছাত্রের মধ্যে মাত্র একজনের জবানবন্দি কূটকৌশলের মাধ্যমে আদায় করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।’
নুরুল আজিম রনি বলেন, ‘পুলিশের এই তদন্ত প্রতিবেদন চ্যালেঞ্জ করে বিজ্ঞ আদালতের কাছে আজ (২৪ নভেম্বর) আমি মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য পিবিআইকে দেওয়ার অনুরোধ করি। বিজ্ঞ আদালত সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে পিবিআই চট্টগ্রামকে মামলাটি পুনঃতদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’
এ প্রসঙ্গে চকবাজার থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই বদিউল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ‘মিটিংয়ে আছি’ বলে মুঠোফোন সংযোগ কেটে দেন।
একই প্রসঙ্গে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছিল— একটা মামলার ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছে। আরেকটা মামলার চার্জশিট হয়েছে। তদন্তকারী অফিসার তদন্ত করে রিপোর্ট দাখিল করেছে। এখন বাদি যদি মনে করে যে ন্যায়বিচার পাননি, তাহলে না-রাজি দিতেই পারে।’
এ ব্যাপারে আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, ‘তদন্তকারী কর্মকর্তা যে ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছে সেখানে সে বলেছে তদন্তে সত্যতা পায়নি। কিন্তু এই মামলার সাথে সংশ্লিষ্ট কারোই থেকে তথ্য উপাত্ত না নিয়েই তদন্তকারী কর্মকর্তা চুড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। তাই বাদি রনি কোর্টে হাজির হয়ে প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে লিখিত আপত্তি জানায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাদি তার এজাহারে উল্লেখ করেছে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কারো কাছ থেকে তথ্য-উপাত্ত না নিয়েই পুলিশ মনগড়া প্রতিবেদন দাখিল করেছে। তাই সবদিক বিবেচনা করে আদালত পুনঃতদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেয়।’