চতুর্থ শ্রেণির এক মাদরাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে দরিদ্র পরিবার সেবা সংস্থা ক্লিনিকের চিকিৎসক বিজয় কৃষ্ণ তালুকদারের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছেন ট্রাইব্যুনাল। চার্জ গঠনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকার ৫ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম শাসসুন্নাহার চার্জ গঠনের আদেশ দেন।
এদিন আসামিপক্ষ মামলার বাদী (ভিকটিমের বাবা) ও ভিকটিমকে ম্যানেজ করে আদালতে নিয়ে আসেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
শুনানিকালে মামলার বাদী ও ভিকটিমকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বলানো হয়, আসামিকে অব্যাহতি দিলে তাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আদালত এর আগে মামলায় দেয়া ভিকটিমের জবানবন্দি ও মেডিক্যাল রিপোর্ট পর্যালোচনা করে ধর্ষণের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় চার্জ গঠনের আদেশ দেন।
এ সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর আলী আসগর স্বপন বলেন, ধর্ষণের মামলায় আপোষের কোনো সুযোগ নেই। মেডিক্যাল রিপোর্টে ধর্ষণের আলামতের কথা বলা হয়েছে। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে ট্রাইব্যুনাল চার্জ গঠন করেছেন।
চিকিৎসক বিজয় কৃষ্ণ তালুকদার বরগুনা জেলার বামনা থানার চালিতা বুনিয়া গ্রামের যোগেন্দ চন্দ্র তালুকদারের ছেলে। তিনি দক্ষিণখান থানাধীন দরিদ্র পরিবার সেবা সংস্থা ক্লিনিক পরিচালনা করেন। ধর্ষণের শিকার হওয়া কিশোরী স্থানীয় একটি মাদরাসা চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে।
চলতি বছর ২১ এপ্রিল মামলার বাদীর মেয়ে (১৩) চোখে আঘাতজনিত সমস্যা নিয়ে দক্ষিণখান থানাধীন হাজী মিল্লাত স্কুলের পাশের দরিদ্র পরিবার সেবা সংস্থায় (ক্লিনিক) আসামিকে দ্বারা চিকিৎসার করান। কিন্তু চোখের সমস্যা দূর না হওয়ায় ২৩ এপ্রিল দুপুর আড়াইটায় আবার ক্লিনিকে যান তারা। আসামি ওই কিশোরীর শরীরে স্যালাইন দেন এবং একটি ইনজেকশন আনার জন্য ভিকটিমের বাবাকে ওষুধের দোকানে পাঠান। বাদী অনেক খোঁজাখুঁজির পর তা না পেয়ে সাড়ে ৩টার দিকে ফেরত আসেন। বেলা ৪টার দিকে স্যালাইন শেষ হওয়ায় মেয়েকে বাসায় নিয়ে যান বাদী। বাসায় যাওয়ার পর মেয়ে আবার অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, স্যালাইন দেয়ার সময় আসামি তাকে ধর্ষণ করেন। যা ভিটকটিম আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছে।
ওই ঘটনায় ভিকটিমের বাবা ২৭ এপ্রিল দক্ষিণখান থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় চিকিৎসক বিজয় কৃষ্ণ তালুকদার মামলার দিনই গ্রেপ্তার হন। পরদিন ২৮ এপ্রিল তাকে আদালতে হাজির করা হলে সিএমএম আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ২৬ মে সিএমএম আদালত আসামির জামিন মঞ্জুর করলে তিনি কারামুক্ত হন।
মামলাটি তদন্তের পর চলতি বছর ৪ জুলাই তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগের পুলিশ পরিদর্শক তৃপ্তি খান সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।