চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ভর্তি পরীক্ষায় টেলিগ্রামের মাধ্যমে জালিয়াতির সময় জোবায়ের আহমেদ সিয়াম নামে এক শিক্ষার্থীকে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষার ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ৫৩২ কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক জোবায়ের আহমেদ সিয়ামের বাড়ি পাবনা জেলায়।
সূত্র জানায়, পরীক্ষা শুরুর ১ মিনিট পর বিকাল ৩টা ৩১ মিনিটে নিজের মোবাইল দিয়ে প্রশ্নের ছবি তুলে খালাতো ভাই ফুয়াজ খান ফিয়ামের কাছে পাঠান সিয়াম। এ ক্ষেত্রে টেলিগ্রাম অ্যাপসের সিক্রেট মেসেঞ্জার ব্যবহার করা হয়। এভাবে বিকাল ৪টা ১১ মিনিট পর্যন্ত ৫৬টি প্রশ্নের উত্তর টেলিগ্রামের মাধ্যমে পেয়ে যান সিয়াম। তবে পরীক্ষা শেষের আগেই ধরা পড়েন ডিজিটাল পদ্ধতিতে জালিয়াতি করা সিয়াম।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কার্যালয়ে এভাবে সাংবাদিকদের ভর্তি জালিয়াতির বিবরণ দেন ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষা দিতে এসে আটক হওয়া জোবায়ের আহমেদ সিয়াম।
তিনি বলেন, পরীক্ষার হলের দায়িত্বরত শিক্ষকরা মোবাইলের বিষয়টি ধরতে পারেননি। কিন্তু আমার পেছনের আসনে বসা এক ছাত্রী মোবাইল দিয়ে ছবি তোলার সময় দেখে ফেলেন। পরে তা শিক্ষকদের জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর রেজাউল করিম বলেন, পরীক্ষা শেষ হওয়ার ২০ মিনিট আগে আমাদের কাছে জালিয়াতির খবর আসে। পরে ওই পরীক্ষার্থীকে প্রক্টর কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। এ সময় তার থেকে মোবাইলের পাশাপাশি একটি বিশেষ ক্যালকুলেটর পাওয়া যায়। যেটি মোবাইলের সঙ্গে যুক্ত করে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো যায়।
তিনি বলেন, আমরা তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বলেছি। ভ্রাম্যমাণ আদালতে নয়, তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হবে।
জিজ্ঞাসাবাদে আটক সিয়াম জানান, পাবনা সরকারি বুলবুল কলেজ থেকে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষা দেন। এই প্রক্রিয়ায় ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার উপায়টি তার খালাতো ভাই ফিয়ামের কাছে জানতে পারেন। ‘এ’ ইউনিটে ৫৬টি প্রশ্নের উত্তর সমাধান করে দিতে ফিয়াম ও তার বন্ধু মেহরাব সহায়তা করেন। ফিয়াম ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল কলেজ ও মেহরাব নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দেন।
এর আগে একই পদ্ধতিতে গত ২৬ অক্টোবর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বি-১ ইউনিটের পরীক্ষা দেন ফিয়াম। ওই সময় টেলিগ্রামের মাধ্যমে ৪০টি প্রশ্নের উত্তর পাঠাতে সাহায্য করেন সিয়াম। এর আগে সিয়াম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন।
তিনি আরও জানান, বিশেষ ক্যালকুলেটর সঙ্গে থাকলেও চবির ভর্তি পরীক্ষায় ব্যবহার করেননি তিনি। কারণ দ্রুতই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছিল। বিশেষ এই ক্যালকুলেটর আলী এক্সপ্রেসের মাধ্যমে ১৬ হাজার টাকায় কিনেছেন তার খালাতো ভাই ফিয়াম।
এদিকে যাচাই-বাছাই শেষে ভর্তি জালিয়াতিতে আটক জোবায়ের আহমেদ সিয়ামকে হাটহাজারী মডেল থানায় পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।